‘নির্দোষ’ লতিফ অপকর্মকারীদের ‘খুঁজে বের করবেনই’

বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতিতে নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ বলেছেন, যারা এই অপকর্ম করেছে, তাদের তিনি ‘খুঁজে বের করবেনই’।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2016, 01:05 PM
Updated : 6 Feb 2016, 01:18 PM

এই ঘটনায় নিজ দলের কারও ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’ হয়েছেন বলেও শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের এই সংসদ সদস্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সফরের সময় বন্দর নগরীতে লতিফের নামে লাগানো বিলবোর্ডে বঙ্গবন্ধুর বিকৃতি ছবি ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

ফেইসবুকে এনিয়ে আলোচনা উঠার পর চট্টগ্রামের ছাত্র ও যুবলীগের একদল নেতা-কর্মী বিক্ষোভ-প্রতিবাদের পাশাপাশি ‘জামায়াত-ঘনিষ্ঠ’ লতিফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন। মামলাও হয় তার বিরুদ্ধে।

তীব্র সমালোচনার মধ্যে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে শনিবার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চট্টগ্রাম চেম্বার মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে আসেন লতিফ।

চট্টগ্রাম-১১ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, “আমাকে আওয়ামী লীগের নমিনেশন দেওয়ার পর থেকেই একটি মহল দীর্ঘদিন ধরেই আমার বিরোধিতা করেছে, হেনস্থা করেছে। এর (বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি) মধ্য দিয়ে আওয়ামী পরিবারকে হেয় করেছে।”

চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি লতিফ ২০০৮ সালে হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

ছাত্র ও যুবলীগ নেতাদের দাবি, ‘জামায়াত-ঘনিষ্ঠ’ বলেই লতিফ বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করেছেন।       

সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য এম এ লতিফ

লতিফ বলেন, “এতে আমার বেনিফিট কী? আমি তো নিজের ছবি দিতে পারতাম।

“গত সাতবছর ধরে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ আমাকে লাঞ্ছিত করেছে, অনেক অভিযোগ করেছে। হীন রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তারা এসব কাজ করেছে। আমি কখনোই তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। আমি দল, আদর্শ এবং শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি।”

এর আগে কখনোই উন্নয়ন প্রচারণায় নিজের ছবি ব্যবহার করেননি দাবি করে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সর্বোত মিথ্যা এবং কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের পক্ষে এ গর্হিত কাজ করার প্রশ্নই ওঠে না।”

নিজের সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও এ ঘটনায় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মনে বিরূপ ধারণা তৈরি হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন লতিফ।

নিজের নামে বিলবোর্ড স্থাপনের কথা স্বীকার করলেও কোনো মহল তার ‘শ্লোক’ ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুর ছবি দিয়ে ব্যনার-ফেস্টুন করতে পারে বলেও দাবি করেন তিনি।

“যে গাছে ফল থাকে সে গাছে ঢিল পড়ে। আমি কাজ পাগল মানুষ। উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সেজন্য অনেকেই আমার পেছনে লেগে আছে।”

এম এ লতিফের নামে এই দুটি বিলবোর্ড লাগানো হয়েছিল বন্দর নগরীতে

এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য বলেন, “ছবি বিকৃতির বিষয়টি জানার পর আমি দলের সর্বোচ্চ মহলে আলাপ করেছি। তাদের মতে, এ কাজটি আমি করতে পারি না। এটি কে করেছে, তা দ্রুত বের করার জন্যও বলেছেন।

“আমার ছবি দিয়ে জাতির জনকের ছবি বিকৃতির কাজ কে করেছে, তা খুঁজে বের করবই। এটি খুঁজে বের করার দায়িত্ব আমার।”

ছবি বিকৃতির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে সাংবাদিকদের সহযোগিতাও চেয়েছেন লতিফ।

সংবাদ সম্মেলনের বিষয়সূচিতে চট্টগ্রাম চেম্বারের শতবর্ষপূর্তি উদযাপনও ছিল। উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন লতিফ।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম না থাকলেও সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুন নেওয়াজ সেলিম, সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদসহ কয়েকজন পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

লতিফ বলেন, “শতবর্ষ উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান আমি। ফেস্টুন দেওয়া এবং শতবর্ষ উদযাপন অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত। সেকারণেই এ সংবাদ সম্মেলন।”