বিএনপির কাউন্সিল ১৯ মার্চ,  জায়গা চেয়ে আবেদন

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগেই ১৯ মার্চ জাতীয় কাউন্সিল করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি; সম্ভাব্য তিনটি স্থানের নাম দিয়ে এ আয়োজনের জন্য গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের অনুমতিও চাওয়া হয়েছে।  

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2016, 07:11 AM
Updated : 5 Feb 2016, 09:53 AM

শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের এই তারিখ ঘোষণা করেন।

আওয়ামী লীগ জাতীয় সম্মেলনের ঘোষণা দেওয়ার পর গত ২৩ জানুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে কাউন্সিল করার সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। তবে সে সময় কোনো নির্দিষ্ট তারিখ বলেননি তিনি।

শুক্রবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “আমরা মার্চের ১৯ তারিখ কাউন্সিল অনুষ্ঠানের জন্য তিনটি জায়গার অনুমতি চেয়ে দরখাস্ত করেছি। এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জন্য গণপূর্ত কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, তার জবাব পেয়েছি। তারা বলেছে, তাদের দিতে আপত্তি নেই, এটা এখন পুলিশের অনুমোদনের বিষয়।”

পুলিশ কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত জবাব পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে না হলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র বা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তন কাউন্সিলের জন্য চেয়েছে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে সংসদের বাইরে থাকা দলটি।

তবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র বা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করে গেলেও তারা কোনো জবাব দেয়নি বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা রিজভী।

বিএনপির সর্বশেষ পঞ্চম কাউন্সিল হয়েছিল ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর, শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। তিন বছর পর পর কাউন্সিল অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও ছ্য় বছরের বেশি সময় পর দলটির ষষ্ঠ কাউন্সিল হতে যাচ্ছে।

গত কাউন্সিলে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে কোনো পরিবর্তন আসেনি; ১৯৮৩ সাল থেকে দলটির চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করছেন খালেদা জিয়া। ১৯৮১ সালে স্বামী জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর রাজনীতিতে আসেন তিনি।

ওই সম্মেলনে মহাসচিবের দায়িত্ব পান খন্দকার দেলাওয়ার হোসেন। ২০১১ সালে তার মৃত্যুর পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হয়। এরপর থেকেই তিনি এই দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এবং নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী, যথাসময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাউন্সিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

আওয়ামী লীগ তাদের জাতীয় সম্মেলন করতে যাচ্ছে আগামী ২৮ মার্চ। ক্ষমতাসীন দলটির সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিল ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর।

সংবাদ সম্মেলনে দলের জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতির বিষয়টি তুলে ধরেন বিএনপি নেতা রিজভী।

তিনি বলেন, “আমরা জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতির জন্য কাজ শুরু করেছি, প্রস্তুতি কাজ শুরু হয়েছে।

“ইতোমধ্যে কাউন্সিলরদের যে ক্যাটাগরি আছে- যেমন জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা, থানা ও পৌরসভার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা এরা আমাদের কাউন্সিলর।”

“এর বাইরে জেলা কমিটিগুলো দুইজন মহিলা প্রতিনিধির নাম কাউন্সিলর হিসেবে কেন্দ্রে সুপারিশ করে পাঠাবেন, সেজন্য চিঠি দিয়েছি,” বলেন দলের যুগ্ম মহাসচির রিজভী।

এছাড়া জেলা ও মহানগর কমিটিগুলো পুনর্গঠনে কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলা সফর সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

এছাড়া দলের জাতীয় কাউন্সিলে বিগত সময়ে প্রয়াত ও নিহত নেতাকর্মীদের নামে শোক প্রস্তাব আনা হবে বলে জানান এই বিএনপি নেতা।

“জাতীয় কাউন্সিলে শোক প্রস্তাবের মধ্যে দলীয় নেতাকর্মীরা যারা বিগত আন্দোলনসহ সরকারের নির্যাতনে এবং বিভিন্ন সময়ে মারা গেছেন, নিহত হয়েছেন, তাদের নামের সর্বশেষ তালিকা ২৫ ফ্রেবুয়ারির মধ্যে পাঠানোর জন্য আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।”

জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটি গঠনের বিষয়টি জানতে চাইলে রিজভী বলেন, ‍“জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি কমিটি গঠন প্রক্রিয়াধীন আছে। তা হলে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।”

সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতা কাজী আসাদুজ্জামান আসাদ, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, হাবিবুর রহমান হাবিব, হাবিবুল ইসলাম, আবদুল লতিফ জনি ও আসাদুল করীম শাহিনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।