মুক্তিযুদ্ধ অবমাননায় শাস্তি দিতে আইন হচ্ছে

মুক্তিযুদ্ধ অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে।  

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2016, 05:19 PM
Updated : 31 Jan 2016, 08:01 PM

রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ তথ্য জানান।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার পর মুক্তিযুদ্ধ অবমাননার জন্য শাস্তি দিতে আইন করার দাবি ওঠে।

এই আইন নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

আইনে কোন কোন বিষয় শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে সে বিষয়েও ধারণা দিয়েছেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর কিছু রাজনীতিবিদের মুক্তিযুদ্ধ ও তৎকালীন সময়ের ইতিহাস বিকৃতির ‘প্রবণতা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

“এ প্রেক্ষাপটে কোনও ব্যক্তি যদি মুক্তিযুদ্ধ এবং তৎকালীন সময়ের ইতিহাস বা স্বীকৃত ঘটনাবলী সম্পর্কে অসত্য বা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য পরিবেশন, প্রকাশ করেন অর্থ্যাৎ সামগ্রিকভাবে মুক্তিযুদ্ধকে কেউ অবমাননা করেন তাহলে সেই সব কর্মকাণ্ডকে অপরাধ গণ্য করে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্দেশ্যে আইন করার বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।”

গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীতে একটি আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, “আজকে বলা হয় এত লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানা রকম তথ্য আছে।”

এ বক্তব্যের পর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন থেকে খালেদা জিয়ার সমালোচনা হয়। বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্যও বিএনপি নেত্রীর প্রতি আহ্বানের পাশাপাশি তার শাস্তি করে রাজপথে বিক্ষোভও হয়েছে।

বিএনপি প্রধানের ওই বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল অভিযোগ করে আদালতে মামলাও হয়েছে, যাতে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য খালেদাকে তলব করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গ টেনে সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল আইনমন্ত্রীর কাছে জানতে চান মুক্তিযুদ্ধ অবমাননার আইনের জন্য চলতি অধিবেশনে সংসদে বিল উত্থাপন করা হবে কি না।

জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, “এই আইনের বিষয়টি নিয়ে আলাপ- আলোচনা চলছে। এখনো আইনের খসড়া দাঁড় করানো যায়নি।

“আইনটি তাড়াতাড়ি করাটাই আমাদের উদ্দেশ্য। তবে এই মুহূর্তে সময় বেঁধে দিতে পারছি না। কিছুটা সময় হয়তো লাগতে পারে।”

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, “সাক্ষী সুরক্ষা আইনের খসড়াটি এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আশা করি শিগগিরই আমরা এটা মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে তুলতে পারব।”

আরেক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, “আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে যারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এ ধরনের কার্যকলাপের সাথে জড়িতদের বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর। আশা করা যায় দ্রুত এসব অপরাধের বিচার কার্য শেষ হবে।”

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তরে তিন ‍লাখ ২ হাজার ৯০৪টি পদ শূন্য রয়েছে বলে জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জানিয়েছেন।

রোববার সংসদের প্রশ্নোত্তরে ওয়াসিকা আয়শা খানের প্রশ্নের জবাবে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত শূন্য পদের এ হিসাব দেন তিনি।

মন্ত্রীর তথ্যমতে, নবম তদুর্ধ্ব (প্রথম শ্রেণি) গ্রেডের ৩৯ হাজার ৫৬৪টি, ১০-১২তম (দ্বিতীয় শ্রেনি) গ্রেডের ৩০ হাজার ৪২২টি, ১৩-১৭তম (তৃতীয় শ্রেনি) গ্রেডের ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪১৭টি এবং ১৮-২০ তম (চতুর্থ শ্রেনি) গ্রেডের ৬৯ হাজার ৫০১টি পদ শূন্য রয়েছে।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকালে অধিবেশন শুরু হয়।