একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর নিহত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, লেখক, চিকিৎসক, শিল্পী ও সাংবাদিকরা ‘নির্বোধের’ মতো মারা যান বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর বলেন, “তারা নির্বোধের মতো মারা গেল, আমাদের মতো নির্বোধেরা প্রতিদিন শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে ফুল দেয়। না গেলে আবার পাপ হয়।
“উনারা যদি এতো বুদ্ধিমান হন, তাহলে ১৪ তারিখ পর্যন্ত তারা নিজের ঘরে থাকে কী করে, একটু বলেন তো।"
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী ওই নিধনযজ্ঞ চালায়; তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে- তা নিশ্চিত করা।
১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দুদিন আগে বুদ্ধিজীবী হত্যায় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সদস্যরা।
সেই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত যে চার যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ সাজার রায় হয়েছে, তাদের মধ্যে একাত্তরের বদর কমান্ডার জামায়াত নেতা আলী আহসান মো. মুজহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে গত ২২ নভেম্বর।
“যুদ্ধাপরাধীর বিচারটা করছেন ভালো। এরা (বুদ্ধিজীবী) যে শেষ দিন পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের বেতন-ভাতা খাইছে নির্বোধের মতো।”
গয়েশ্বর বলেন, “হ্যাঁ, নেতৃত্বের অজ্ঞতার কারণে ২৫ মার্চ যারা মারা গেছেন, আত্মাহুতি দিয়েছেন, তারা না জানার কারণে। কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর যারা মারা গেছেন, তারা অজ্ঞতার কারণে মারা যাননি। তারা জ্ঞাত সারে বাড়িতে ছিলেন। তারা প্রতিদিন তো যে যেখানে কর্মস্থল ছিল, সেখানে কর্মস্থলে যাইতেন।”
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্তদের নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন গয়েশ্বর।
তিনি বলেন, “আজকের যে স্পিকার (শিরিন শারমিন চৌধুরী) আছেন তার বাবা রফিকুল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন না কি? উনি পাকিস্তান সরকারের চাকুরি করেননি? শফিউল আজম, মখা আলমগীর (মহিউদ্দিন খান আলমগীর), আশিকুর রহমান পাকিস্তান সরকারের চাকুরি করেননি?
“যারা পাকিস্তানের চাকুরি করলেন, বেতন-ভাতা খাইলেন, তারা হয়ে গেলেন মুক্তিযোদ্ধা, আর যারা পালায়ে পালায়ে না খেয়ে বেড়ালো তারা হয়ে গেলেন রাজাকার। তা-ই না? এ বিষয়গুলো আমাদের আজ পরিষ্কার করা দরকার।”