মেয়র প্রার্থী ঠিক করতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণভবনে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বসেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
এই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রত্যয়নের আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা শেখ হাসিনাকে দিয়ে ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।
সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠকের পর প্রথমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা হবে না বলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাড়ির কর্মকর্তারা জানিয়ে দেন।
পরে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা সাংবাদিকদের বলেন, ধানমণ্ডিতে দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থীর বিষয়ে জানানো হবে।
রাত সোয়া ১০টার দিকে ধানমণ্ডির কার্যালয়ের কর্মচারীরা সংবাদ সম্মেলনের জন্য সাংবাদিকদের প্রস্তুত হতে বলেন।
কিন্তু সংবাদ সম্মেলন আর শুরু হচ্ছে না দেখে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বলা হচ্ছিল- ‘কিছুক্ষণের’ মধ্যেই শুরু হবে।
পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল হোসেন সাংবাদিকদের সামনে এসে বলেন, কোনো সংবাদ সম্মেলন, সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে না। মেয়র প্রার্থীদের তালিকাও প্রকাশ করা হবে না।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উপস্থিত অনেক মেয়র প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এদের মধ্য থেকে একজন বলে ওঠেন- “এই লুকোচুরির মানে কী?”
কামাল হোসেনকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সাতজন সাংগঠনিক সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা মনোনীত প্রত্যেক প্রার্থীকে হাতে হাতে প্রত্যয়নপত্র দিয়ে দেবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মনে হয় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়নি। তাই প্রকাশ করতে দেরি হচ্ছে।”
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের তালিকা পাওয়া না গেলেও তাদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থীদের নাম মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে ঘোষণা শুরু করেছে।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় ২৩৫ পৌরসভায় নির্বাচনে ৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচন হচ্ছে।
তফসিল ঘোষণার পর গত বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তৃণমূল থেকে পাঠানো নাম থেকে কেন্দ্র নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে।
তৃণমূল থেকে আসা প্রস্তাব নিয়ে সোমবার গণভবনে বৈঠকে বসেছিল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা ছিলেন।
তবে ওই বৈঠকের পরও চূড়ান্ত তালিকা করা যায়নি বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা জানা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির এক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, প্রতিটি পৌরসভায় একজন করে প্রার্থীর তালিকা নিয়ে বৈঠকটি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি।
“শতাধিক পৌরসভায় একাধিক নাম এসেছে। কোনো কোনোটিতে সাতটি পর্যন্ত নাম এসেছে। কিছু কিছু স্থানে বিএনপি থেকে সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া ব্যক্তির নামও এসেছে।”