নাইকো মামলায় আত্মসমর্পণ করে খালেদার জামিন আবেদন

নাইকো দুর্নীতি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2015, 05:46 AM
Updated : 30 Nov 2015, 06:47 AM

তার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস জানান, সোমবার বেলা ১১টা ১৬ মিনিটে গুলশানের বাসা থেকে রওনা হয়ে বেলা সোয়া ১২টায় পুরান ঢাকায় আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছান খালেদা।

ব্যারিস্টার খন্দকার মাহবুব হোসেন, মাহবুব উদ্দিন খোকন ও নিতাই রায় চৌধুরীসহ আইনজীবীরা আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

খালেদা পৌঁছানোর পরপরই রেবতি ম্যানশনের দ্বিতীয় তলায় ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে খালেদার জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়। এম আমিনুল ইসলাম এ আদালতের বিচারক।

দুদকের পক্ষে শুনানিতে উপস্থিত আছেন মোশাররফ হোসেন কাজল ও মীর আব্দুস সালাম।

সাত বছর আগে দায়ের করা এ দুর্নীতি মামলা বর্তমানে অভিযোগ গঠন পর্যায়ে রয়েছে।

এদিকে খালেদার আত্মসমর্পণকে ঘিরে পুরান ঢাকার আদালত পাড়ার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সকাল থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ও আশেপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে দেড় শতাধিক পুলিশ ও র্যা ব। আদালত ফটকে বসানো হয়েছে আর্চওয়ে।

আশপাশের সড়কগুলোতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আদালতের ভেতরে ও আশপাশের এলাকায় আদালতের কর্মচারী ও জনসাধারণকে প্রয়োজনে তল্লাশি করা হচ্ছে।

মামলা বৃত্তান্ত

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। পরের বছর ৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

এতে অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।

মামলা হওয়ার পর খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই দুর্নীতির এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাই কোর্ট, সেই সঙ্গে দেওয়া হয় রুল।

মামলা দায়ের কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। ২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলায় জামিন পান খালেদা।

প্রায় সাত বছর পর চলতি বছর শুরুতে রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয় দুদক। খালেদার আবেদনে রুলের ওপর শুনানি করে গত ১৮ জুন রায় দেয় হাই কোর্ট।

খালেদার করা আবেদন  খারিজ করে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হয় ওই রায়ে। সেই সঙ্গে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আর যারা আসামি

খালেদা জিয়া ছাড়া এ মামলার বাকি আসামিরা হলেন- চার দলীয় জোট সরকারের আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম) এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।