জিয়াকে রাষ্ট্রপতি বলা যাবে না: হাসিনা

আদালতের রায় অনুসরণ করে জিয়াউর রহমানকে ‘রাষ্ট্রপতি’ না বলতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2015, 01:48 PM
Updated : 28 Nov 2015, 02:58 AM

বৃহস্পতিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ ও পার্লামেন্টারি বোর্ডের যৌথসভার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রপতি বলা যাবে না।”

জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রপতি বললে আদালতের রায়ের অবমাননা হবে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর খন্দকার মোশতাক আহমেদ ক্ষমতায় বসে সেনাপ্রধান করেন জিয়াকে। এরপর সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন জিয়া।

সামরিক আইন প্রশাসক হওয়ার পর নিজেকে রাষ্ট্রপতিও ঘোষণা করেন জিয়া, যা তিনি অবৈধভাবে করেছিলেন বলে হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে।  

এভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলকে উচ্চ আদালতের অবৈধ ঘোষণার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “জিয়াউর রহমান ও এরশাদের ক্ষমতা দখল সম্পূর্ণ অবৈধ।

“উচ্চ আদালত সংবিধানের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনী বাতিল করেছে। উচ্চ আদালত যখন ঘোষণা দেয়, তখন তা মানতে হবে। তারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল বলেই তাদের সব কাজ অবৈধ।”

জিয়া ক্ষমতা নেওয়ার পর বিএনপি গঠন করে রাজনীতিতে নামেন। ১৯৮১ সালে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তার মৃত্যুর পর দলটির নেতৃত্বে আছেন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং তাদের জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদের যুদ্ধাপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।  

একটি জাতীয় দৈনিকের ‘প্রথম এক মঞ্চে দুই ফাঁসির ঘটনা’ শিরোনামের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে সরকার প্রধান বলেন, “একসাথে দুজনের ফাঁসি এই প্রথম না।”

জিয়াউর রহমান

জিয়ার শাসনামলে ১৯টি সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “একটি করে ক্যু হয়েছে। আর, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ওই ফাঁসির দড়িতে ১০/১৫ জন করে ফাঁসি দিয়েছে। একটি ক্যু হওয়ার পর ১৫ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়।”

ওই সময় নিয়ম মেনে ফাঁসি দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “শেষ হতে পারেনি,আরেকটি ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “জিয়া মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারদের অধিকাংশই শেষ করে দিয়েছে। দেড়শ’ মানুষকে একরাতে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।”

জিয়ার সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের আটক করে দিনের পর দিন অত্যাচার-নির্যাতনের বর্ণনাও দেন শেখ হাসিনা।

জিয়া ও খালেদা জিয়ার সরকারে স্বাধীনতাবিরোধী স্থান দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা এবং নারী নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “স্বাধীনতার পর যে বীভৎস অবস্থা দেখেছি, তা ভুলতে পারি নাই।”