সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে বিএনপি নেতাদের নিয়ে এই ‘অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে বলেও শনিবার এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
সম্প্রতি ঢাকা ও রংপুরে এক ইতালীয় এবং এক জাপানি হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দায়ী করে বক্তব্য আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
নজরুল বলেন, “লন্ডনে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। আজকের যুগে আমরা জানার আগে সরকার জানে তার কবে চোখের অপারেশন হয়েছে, আরেকটা কবে হল, কখন পায়ের জন্য তাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছিল- সবই জানে। এসব জানার পরও তারা (সরকার) বাজে কথা বলছে, অপপ্রচার করে।
“উদ্দেশ্য একটাই- যে কোনো প্রকারে বিএনপিকে হেয় করার চেষ্টা তাদের।”
এরশাদবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত নাজির উদ্দিন জেহাদের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শহীদ জেহাদ স্মৃতি পরিষদের আলোচনা সভায় একথা বলেন নজরুল।
সকালে দৈনিক বাংলা মোড়ে জেহাদ স্কয়ারে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতারা ফুল দিয়ে ছাত্রদল নেতা জেহাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
নজরুল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী, তার ছেলে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, যোগাযোগমন্ত্রী তারা সবাই বলেছেন, লন্ডনে বসে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশি খুনের ষড়যন্ত্র করছেন বা করেছেন।
“বহু বছর আগে মধ্য যুগে একটা বাংলা কবিতা ছিল- বানরের সঙ্গীত গায়, শিলা ভাসে জলে, দেখিয়াও না হয় প্রত্যয়। আমাদের দেশের ক্ষমতাসীনরা আছেন, তারা অবিশ্বাস্য ও হাস্যকর সব কথা বলেন।”
সারাদেশে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার এবং মামলার সমালোচনা করে নজরুল বলেন, “এখন এমন কোনো ইউনিয়ন নেই, যেখানে বিএনপি নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার হয়নি। এমন কোনো গ্রাম নেই, যেখানে কোনো না কোনো মানুষ ও বিরোধী দল করার কারণে মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে পলাতক জীবন যাপন করছেন না।
“এটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ হতে পারে না। আমরা স্বৈরাচারের কথা বলি। কিন্তু তখনও মানুষের আজকের মতো এরকম অনিশ্চিত জীবন ছিল না।”
দুই বিদেশি হত্যার প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন, “এটা জাতি হিসেবে লজ্জার। এটা দেশ হিসেবে আমাদের ক্ষতির কারণ।
“কথায় কথায় জঙ্গিবাদ, কথায় কথায় প্রতিপক্ষকে জঙ্গি বা জঙ্গির সমর্থক বা উস্কানিদাতা হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা এটা করতে করতে বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে প্রশ্নবোধক করে রাখা হয়েছে। ফলে দেশের ভাবর্মূতি নষ্ট হচ্ছে।”
বিদেশি হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ক্ষুণ্ন ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়ে নজরুল বলেন, “তা নাহলে বাণিজ্যে ঘাটতি হবে, দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হবে। দেশে অশান্ত পরিবেশ হবে। ওই অশান্ত পরিবেশের মাধ্যমে আমরা কোনো সুবিধা নিতে চাই না।
“আমরা রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের রাজনৈতিক দাবি আদায় করতে চাই। কিন্তু দেশের স্বার্থ নষ্ট করে নয়। এজন্য আমরা বলতে চাই, দেশের শান্তি শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করা হোক।”
জেহাদ স্মৃতি পরিষদের এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহসভাপতি নব্বইয়ের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব।
বক্তব্য রাখেন যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নব্বইয়ে ছাত্রনেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, জাগপার সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুর রহমান আসাদ, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জেহাদ স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পা্দক চামেলী মাহমুদ।