জঙ্গিবাদ রোধে ‘জাতীয় ঐক্য’ চায় বিএনপি

দুই বিদেশি হত্যার প্রেক্ষাপটে জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সব রাজনৈতিক দল ও সচেতন নাগরিকদের নিয়ে ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়ে তুলতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহসাচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2015, 09:23 AM
Updated : 8 Oct 2015, 12:16 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আপনারা লক্ষ্য করেছেন, আজ বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উপস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অনেক কথা হচ্ছে। সারা পৃথিবীতে জঙ্গিবাদ একটা বড় সমস্যা। এর বিরুদ্ধে সমস্ত সচেতন মানুষ এবং যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।

“দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে অপরাজনীতি করা হচ্ছে। এই অপরাজনীতির ফলে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হচ্ছে না। এ ব্যাপারে কোনও প্রচেষ্টাও নেওয়া হচ্ছে না।”

ফখরুল বলেন, “আমরা মনে করি, আজকে বড় প্রয়োজন হচ্ছে- সমস্ত পক্ষগুলোকে নিয়ে, সব রাজনৈতিক দল ও সচেতন নাগরিকদের নিয়ে একটা জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা দরকার। এই উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে।”

বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় সরকারের বিভিন্ন অংশের বক্তব্যে ‘অসামঞ্জস্য’ রয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, কেউ ঘটনার জন্য আইএসকে দায়ী করছেন। কেউ দায়ী করছেন অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসকে।

“আমরা আশঙ্কা করছি, এ ধরনের অবস্থা চলতে থাকলে দেশে ‘গণতন্ত্রহীনতার’ সুযোগ উগ্রপন্থিরা গ্রহণ করবে, যেটা আমরা কেউই চাই না। এতে আমরা আতঙ্কিত বোধ করি।”

এই ‘পরিস্থিতি’ নিয়ে অপরাজনীতি না করে ‘জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের মাথাচাড়া দিয়ে উঠা ঠেকাতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“আজ এটাকে নিয়ে অপরাজনীতি করার অপচেষ্টা চলছে। এটা শুধুমাত্র সংকীর্ণ দলীয় রাজনীতির চিন্তা থেকে আসে। এখানে বৃহত্তর চিন্তা করা প্রয়োজন, সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা প্রয়োজন।

“এজন্য আমরা বার বার বলেছি, গণতন্ত্রের পরিবেশ সৃষ্টি করা, গণতন্ত্রের জন্য স্পেস তৈরি করা ও সহনশীলতা প্রয়োজন। এর কোনো বিকল্প নেই।”

সকাল সাড়ে ১১টায় মির্জা ফখরুল নয়া পল্টনের কার্যালয়ে এলে দলের নেতাকর্মীরা তাকে অভ্যর্থনা জানান। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সৃষ্ট জঙ্গিবাদের প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “আমাদের সময়েও এরকম একটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। তখন দেশের আলেম-উলামারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সন্ত্রাস যে ইসলামের অংশ নয়- এই কথাটা তারা পরিষ্কার করে বলেছিলেন; এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।”

‘রাজনৈতিক সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে দুই বিদেশী নাগরিক হত্যাকাণ্ডর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান মির্জা ফখরুল।

“এটাকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলকে দমন করবার জন্য গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলা দায়ের বন্ধ করতে হবে।”

এ সময় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন, কেন্দ্রীয় নেতার আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, শামীমুর রহমান শামীম, তকদির হোসেন জসিম ও রফিক শিকদার উপস্থিত ছিলেন।