সেই বিএনপি নেতাকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিৎ: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকায় ইতালীয় নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হত্যাকাণ্ড ও কয়েকটি দেশের দূতাবাসের সতর্কতা জারির পর বিএনপির এক নেতার বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

লাবলু আনসার, নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2015, 08:47 AM
Updated : 30 Sept 2015, 07:10 PM
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওই নেতার ‘সংশ্লিষ্টতা’ রয়েছে কি না- সে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে ফিরে তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

যুক্তরাষ্ট্রে সফররত শেখ হাসিনা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। তাভেল্লা হত্যাকাণ্ড, জঙ্গিবাদের শঙ্কা, দেশের রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।  

জঙ্গি হামলার শঙ্কায় অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট দলের সফর নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের চলাচলে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়।

এই হত্যার প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক জুজুর ভয় দেখিয়ে’ সরকার নিজেই এখন তার শিকারে পরিণত হয়েছে।

তাভেল্লা হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাংবদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা অবাক হয়ে দেখলাম, বিভিন্ন দূতাবাস থেকে রেড অ্যালার্ট জারির পরই বিএনপির এক নেতা জোর গলায় কথা বলছেন।

“এখন তো সন্দেহ হয় যে, উনাকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত, ওই ঘটনার সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা। আমি দেশে ফিরে সে ব্যবস্থাও করব।”

বিএনপি-জামায়াতের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বাংলাদেকে ‘অস্থিতিশীল’ করতে চায়, তারাই এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে থাকতে পারে।

“দেশে একটি রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী মানুষ পুড়িয়ে মারে। মানুষ হত্যা করে দেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়- এমন কিছু লোক তো বাংলাদেশে রয়েছে। তারা তো চাইবেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে। সেই শ্রেণির লোকদেরই কর্মকাণ্ড এগুলো।”

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা জনজীবনে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছি। তবে কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। তেমন ঘটনা এই আমেরিকাতেও ঘটছে।”

বছরের শুরুতে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের মধ্যে পেট্রোল বোমা হামলাসহ সহিংসতায় জড়িতদের বিচার ‘অবশ্যই করা হবে’ বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশে আদৌ কোনো বিরোধী দল আছে কিনা- এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, “সংসদীয় রীতি অনুযায়ী যারা জাতীয় সংসদে বিরোধী দল হিসেবে বসছেন- তারাই সত্যিকারের বিরোধী দল। তবে আমাদের দেশে আরেকটি দল আছে, যারা নির্বাচনে যায়নি। নির্বাচনের পথ ছেড়ে দিয়ে যারা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও করেছে তারা রাজনৈতিক দল হতে পারে না। তারা জঙ্গি দল।”

২০১৯ সালের আগে নির্বাচনের সম্ভাবনা আছে কি না- এ প্রশ্নে সরকারপ্রধান বলেন, “আগাম নির্বাচন কেন? আমরা যে উন্নয়ন করছি এটি পছন্দ হচ্ছে না? হ্যাঁ, যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন পছন্দ করবে না তারাই আগাম নির্বাচনের জন্যে চিৎকার করবে।”

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের সঞ্চালনায় এ প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং রাষ্ট্রদূত এ কে এ মোমেন।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী এবং মশিউর রহমান, জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আব্দুস সোবহান গোলাপ, এফবিসিসিআই সভাপতি মতলুব আহমদ, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল শামীম আহসান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।