মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় ইতালীয়কে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “সাম্প্রদায়িক জুজুর ভয় দেখিয়ে এদেশে কেউ পার পাবে না। আমরা জানি, পশ্চিমা বিশ্বে এই জুজুর ভয় দেখিয়ে এই সরকার হয়তো অনেক কিছু লুফে নেওয়ার চেষ্টা করছে। হয়তো সাময়িকভাবে তারা লাভবান হতেও পারে।
“কিন্তু তারা যে সেটা পারবে না, জুজুর শিকার নিজেরাই হবে- তার প্রমাণ ঘটে গেছে গতকাল সন্ধ্যায়।”
বর্তমান সমাজ ব্যবস্থাকে ‘ক্ষয়িষ্ণু’ অভিহিত করে মঈন বলেন, “একজন সম্পূর্ণ নির্দোষ ব্যক্তি যিনি এদেশের নাগরিকও নন, এ দেশের কোনো ভালো-মন্দের সঙ্গে জড়িত না হয়েও একমাত্র এই দেশের ক্ষয়িষ্ণু সমাজ ব্যবস্থার শিকার হয়ে গতকাল তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।”
সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গুলশান-২ এর ৯০ নম্বর সড়কে ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি আইসিসিও কো-অপারেশন নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রুফ (প্রফিটেবল অপরচ্যুনিটিজ ফর ফুড সিকিউরিটি) কর্মসূচির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ছিলেন।
ওই দিন রাতে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জঙ্গি হুমকি পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ’ জানিয়েছে।
তবে আইএসের এই দাবির সত্যতা যাচাই হয়নি বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মঈন বলেন, “আজ সরকার পশ্চিমা বিশ্বের কাছে বার বার জুজুর ভয় দেখিয়ে মৌলবাদের ধোঁয়া তুলে যে খাল সৃষ্টি করেছে, সেই খালের ক্ষত শরীরে আজকের সরকার নিজেরাই পড়েছে এবং সেটাই গতকাল প্রমাণ হয়েছে।”
সরকার এভাবে চলতে থাকেলে শুধু বাংলাদেশের ‘সমাজনীতি নয়, দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি সমস্ত ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যাবে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফ্রন্টের উদ্যোগে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
সংগঠনের আহ্বায়ক প্রকৌশলী পুলক কান্তি বড়ুয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহবায়ক গৌতম চক্রবর্তী, বৌদ্ধ ফ্রন্টের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, সুশীল বড়ুয়া, সনদ কুমার তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব বিজন সরকার, বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সহ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ড, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ছাত্রযুব ফ্রন্টের সভাপতি অমলেন্দু দাস অপু, বৌদ্ধ ফ্রন্টের সদস্য সচিব বিপ্লব বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।