বৃহস্পতিবার তাদের সাক্ষ্য নেওয়ার পর ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ আগামী ১০ সেপ্টেম্বর শুনানির পরবর্তী দিন ঠিক করেন।
বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের মাঠে স্থাপিত এজলাসে এদিনের শুনানিতে মামলার আসামি খালেদা জিয়া ছিলেন না। তার পক্ষে হাজিরা দেন আইনজীবীরা।
জব্দ তালিকার দুই সাক্ষী সোনালী ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইনসান উদ্দিন আহমেদ ও ক্যাশ কর্মকর্তা শাহজাহান খানকে এদিনে জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
খালেদা জিয়ার পক্ষে তাদের জেরা করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। অন্য আসামিদের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী আমিনুল ইসলাম।
এরপর জব্দ তালিকার অন্য তিন সাক্ষী পূবালী ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ প্রধান কর্মকর্তা এস এম ইসমাইল এবং জনতা ব্যাংকের সাত মসজিদ শাখার মহাব্যবস্থাপক শেখ মকবুল ও ফাহমিদা রহমান।
এ নিয়ে সাত সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হল জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলায়। অন্য দুজন হলেন মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ এবং এজহার গ্রহণকারী পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুল হক ভূঁইয়া।
অন্যদিকে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় এ পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ, তবে তাকে জেরা বাকি রয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাত সাক্ষীর অন্য ছয়জন হলেন- সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হারুনুর রশিদ, ক্যাশ কর্মকর্তা শফিউদ্দিন মিয়া, আবুল খায়ের, প্রাইম ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দা নাজমা পারভীন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট আফজাল হোসেন।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলার আসামি মোট ছয়জন। খালেদা ছাড়া অন্য পাঁচজন হলেন- তার ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
আসামিদের মধ্যে কামাল সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান শুরু থেকেই পলাতক, বাকিরা জামিনে আছেন।
অন্যদিকে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অন্যরা হলেন তার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব ও বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
মুন্না ও মনিরুল জামিনে আছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটির বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় দুদক জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাটি করে।
জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলাটি হয় ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা করা হয়।
গত বছরের ১৯ মার্চ এ দুই দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। এরপর ৭ মে এই দুটি মামলার বিচারের জন্য বকশীবাজারের বিশেষ এজলাসে পাঠানো হয়।