বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জিয়ার কবরে খালেদার শ্রদ্ধা

বিএনপির ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2015, 11:27 AM
Updated : 1 Sept 2015, 01:59 PM

সকাল ১১টা ১০ মিনিটে শেরে বাংলা নগরে জিয়ার কবরে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। সেখানে ফাতেহা পাঠ শেষে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন তিনি।

এ বছর নাশকতার মামলায় হুলিয়া নিয়ে আত্মগোপনে কিংবা কারাবন্দি থাকা অনেক নেতা শ্রদ্ধা জানানোর এই কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে আসতে পারেননি।

দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভোরে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ভবনটি আলোকসজ্জিতও করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অস্থিরতার এক পর্যায়ে রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রে আসেন সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান। তিনি সেনাবাহিনীর উপপ্রধান ছিলেন। 

জিয়া সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে ক্ষমতা দখলের পর ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি গঠিত হয়, যার প্রথম চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব নেন তিনি।

ক্ষমতায় আরোহনের আগে অবশ্য জিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) নামে একটি ডানপন্থি দল গঠিত হয়, যা পরে বিএনপিতে বিলুপ্ত হয়।

জিয়া বীরউত্তম খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধা হলেও তার সময়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে বাংলাদেশের চলা শুরু হয় বলে সমালোচনা রয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধীদের মন্ত্রীও করেছিলেন তিনি।  

রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় ১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হন জিয়া। এরপর দলের হাল ধরেন জিয়ার স্ত্রী খালেদা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, ক্যান্টনমেন্টে জন্ম নেওয়া বিএনপির জনভিত্তি তৈরি করে দেন খালেদাই।

খালেদার নেতৃত্বে বিএনপি ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় যায় বিএনপি। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে দলটির ভরাডুবি ঘটে।

জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতা মওদুদ আহমদ, মাহবুবুর রহমান, আ স ম হান্নান শাহ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল কাইয়ুম, এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবীর খোকন, নাজিমউদ্দিন আলম, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, হেলেন জেরিন খান, শাম্মী আখতার প্রমুখ।

সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের মধ্যে হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবু সাঈদ খান খোকন, মীর সরফত আলী সপু, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, হাফেজ আবদুল মালেক, শাহ নেছারুল হক, আকরামুল হাসান প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য বর্তমানের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেন, “শহীদ জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। বিএনপির কাছে আজকে বড় চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা।”

নির্বাচন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মওদুদ বলেন, “সরকারের অভ্যন্তরীণ অস্বস্তিকর যে অবস্থা দেখতে পাচ্ছি, তাতে আমার মনে হয়, খুব শিগগিরই দেশে একটা নির্বাচন হবে।

“সেই নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে সত্যিকারের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার আবার আসবে বলে আমরা মনে করি।”