বিএনপি-জামায়াত জোটের নাশকতার কারণে অনেক কর্মসূচি পালন করা যায়নি দাবি করে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ বলেছেন, এই কারণে ব্যয় কম হয়েছে।
গোলাপের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দলটির একটি প্রতিনিধি দল সোমবার নির্বাচন কমিশনে গিয়ে গত বছরের আর্থিক আয়-ব্যয়ের বিবরণী জমা দেয়।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতি বছরই সব দলকে আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষিত হিসাব ইসিতে জমা দিতে হয়।
২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ যে প্রতিবেদন ইসিতে দিয়েছিল, তাতে ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা আয়ের বিপরীতে ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়।
সোমবার ২০১৪ সালের প্রতিবেদন জমা দিয়ে গোলাপ জানান, এই বছর দলের আয় হয়েছে ৯ কোটি ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪৩ টাকা। ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৮২১ টাকা।
“আয় বরাবরের মতোই রয়েছে। তবে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে অনেক কর্মসূচি নিতে পারেনি। অন্তত ৯২ দিন নাশকতার সময় আমাদের প্রচারণা-অনুষ্ঠান না থাকায় ব্যয়ও কম হয়েছে।”
বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধ ও হরতাল ছিল ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে ৯২ দিন। আওয়ামী লীগ যে হিসাব দিয়েছে, তা ২০১৪ সালের জন্য।
বিএনপি-জামায়াতের নাশকতায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা মানবিক-আর্থিক সহযোগিতা দলের পক্ষ থেকেও করা হয়েছে বলে জানান দপ্তর সম্পাদক গোলাপ।
আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে ‘অফিসিয়ালি’ আয়-ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানানো যাচ্ছে না বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের আয় ২০১৩ সালে বিএনপির আয়ের ১৬ গুণ ছিল। এবার আওয়ামী লীগের আয় বিএনপির আয়ের তিনগুণ; তবে ব্যয় দুই দলেরই প্রায় সমান।
২০১৩ সালে বিএনপির ৭৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬২ টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় দেখিয়েছে ২ কোটি ২৭ লাখ ২৫ হাজার ৩২৬ টাকা।
গত দুই বছর ধরে বিএনপি তাদের আর্থিক হিসাবে ঘাটতি দেখিয়ে এসেছে।
বিএনপিবিহীন সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ২০১৩ সালে আয় করেছে ৩ কোটি টাকা ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ৪২৯ টাকা। ব্যয় ছিল ২ কোটি ৮২ লাখ ২১ হাজার ৫২৯ টাকা।
২০১৩ সালে অর্ধ কোটি টাকা ঊদ্বৃত্ত থাকায় ২০১৪ সালে এসে তা দিয়ে ঘাটতি মেটায় এইচ এম এরশাদ নেতৃত্বাধীন দলটি।
২০১৪ সালে জাতীয় পার্টির ৯৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয় ১ কোটি ৪৯ লাখ ৪৬ হাজার ৪৪৩ টাকা। আগের বছরের জমা ৫৬ লাখ ২২ হাজার ৮৩১ টাকা দিয়ে ঘাটতি মেটানো হয়।
২০১৪ সালে রাজনৈতিক দলের আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় শেষ হয় ৩১ জুলাই।
আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ ১০টি দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময় বাড়ায় ইসি।