দুর্নীতিতে দণ্ডিত এরশাদের নিজেকে ‘কলঙ্কহীন’ দাবি

গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর ডজনখানেক মামলার মধ্যে কয়েকটিতে দণ্ডিত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2015, 12:05 PM
Updated : 26 August 2015, 12:05 PM

গণতন্ত্রের জন্য ক্ষমতা ছেড়েছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, “এখন মনে হয় ক্ষমতা ছেড়ে ভুল করেছিলাম। ক্ষমতা ছাড়ার ছয় দিনের মধ্যে আমাকে ও আমার মন্ত্রিপরিষদের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আমাদের জেলে পাঠানো হয়, কী ভুল ছিল আমাদের? আমাদের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি কেউ প্রমাণ করতে পারেনি।”

যদিও রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে পাওয়া উপহার সামগ্রী আত্মসাত এবং জাপানি নৌযান কেনার দুর্নীতির মামলায় এরশাদের দণ্ড হয়।

উপহার সামগ্রী আত্মসাতের মামলায় এরশাদের বিরুদ্ধে এক কোটি ৯০ লাখ ৮১ হাজার ৫৬৫ টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়। ১৯৯২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ওই মামলার রায়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত এরশাদকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়। রায়ের বিরুদ্ধে এরশাদ ওই বছরই হাই কোর্টে আপিল করেন। পরে আর মামলাটি এগোয়নি।

এছাড়া জাপানি নৌযান কেনায় অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রথমে এরশাদের তিন বছর এবং পরে আপিলে সাজা কমে দুই বছরের কারাদণ্ড হয়। তবে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দুই বছর তিনি কারাগারে কাটানোয় নতুন করে ওই মামলায় তার আর কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়নি।

সাবেক সামরিক শাসক এরশাদ বলেন, “আমি কোনো মানুষ মারিনি, আমার হাতে কোনো রক্ত নেই। নূর মোহাম্মদকে কে মেরেছে আমি জানি না। মিলনকে মারার পর যখন বিচার হলো আমার কোন সম্পৃক্ততা প্রমাণ করা যায়নি। আমি স্বৈরশাসক ছিলাম না।”

বর্তমানে দেশে মানুষের নিরাপত্তা নেই বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত এরশাদ।

এ পরিস্থিতিতে জনগণ আবার তাকে ‘ক্ষমতায় দেখতে চায়’ দাবি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেছেন, “জনগণের দুঃখ দূর করতে আগামী নির্বাচনে আমাদের সরকার গঠন করতে হবে। কিন্তু কীভাবে? সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।”

সংগঠনকে শক্তিশালী করতে নেতাদের ডাকে তৃণমূলে যেতেও রাজি বলে জানান অশীতিপর এরশাদ।

“আমার যাওয়াতে যদি পার্টি উজ্জীবিত হয়, আমি যাব। যেখানে আমাকে প্রয়োজন মনে করবেন, আমাকে ডাকবেন আমি যাব। পার্টি তৈরির সময় আমি পুরো দেশ চষে বেড়িয়েছি, তখন আমি যুবক ছিলাম। এখনও এ বয়সে আমি তৃণমূলে যেতে রাজি আছি,” বলেন তিনি।

বুধবার বনানীতে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বরগুনা জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব বলেন এরশাদ।

সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সাবেক সংসদ সদস্য জাফরুল হাসান ফরহাদ, গোলাম কিবরিয়া টিপু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।