শওকত মাহমুদ ৪ দিনের রিমান্ডে

চার মামলায় সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৪০ দিন হেফাজতে রাখার আবেদন জানালেও আদালত দিয়েছে চার দিন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2015, 01:15 PM
Updated : 24 August 2015, 01:15 PM

মোট আটটি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্যকে ৮০ দিন হেফাজতে চেয়ে পুলিশের আটটি আবেদন শুনতে সোমবার বসেছিলেন ঢাকার মহানগর হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান।

চারটি আবেদনের শুনানি শুনে একদিন করে চার দিন রিমান্ডের আদেশ দিয়ে ক্লান্তি প্রকাশ করে এই বিচারক বলেন, বাকি চারটির শুনানি পরে যে কোনো দিন নেবেন তিনি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকতকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল।আদালতে তিনি কোনো কথা বলেননি।

তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সানাউল্লাহ মিয়া।

অন্যদিকে রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শাহ আলম তালুকদার।

নাশকতার অভিযোগে পল্টন থানার তিনটি মামলা এবং মতিঝিল থানার একটি মামলায় এক দিন করে মোট চার দিন পুলিশ শওকত মাহমুদকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে। বাকি চারটি মামলাও পল্টন ও মতিঝিল থানার।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকতকে গত ১৮ অগাস্ট গ্রেপ্তারের পর রমনা থানার একটি মামলায় তিন দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের করেছিল পুলিশ।

এরপর শনিবার তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পরদিন রোববার আরও ৮টি মামলায় শওকতকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৮০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন এই সব থানার বিভিন্ন তদন্ত কর্মকর্তা।

যেসব অভিযোগ

মতিঝিল থানার নাশকতার মামলাটিতে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শেখ মফিজুর রহমান রিমান্ডের আবেদনে বলেন,  মতিঝিলের সাদেক হোসেন খোকা রোডের ১৫/১৭ সাজেদা টাওয়ার এবং তার উল্টো দিকে আসামির হুকুমে, মদদে ও অর্থায়নে নাশকতা চালানো হয়।

“তিতাস গ্যাসের স্টাফ বাসের চালককে হত্যার উদ্দেশ্যে বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই নাশকতার অর্থের জোগানদাতা, মদদাতাদের চিহ্নিত করতে, বোমার উৎস জানতে এবং পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে শওকত মাহমুদকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি।”

পল্টন থানার মামলাগুলোর একটির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবুল হাসান হাওলাদার রিমান্ড আবেদনে বলেন, সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্স সংলগ্ন গুলিস্তান জামে মসজিদের সামনে গত ১ ফেব্রুয়ারি যানবাহনে পেট্রোল বোমা ছুড়ে আগুন দেওয়া হয়। এতে আশিয়ান পরিবহনের বাসটি পুড়ে যায়।

আরেকটি মামলায় পল্টন থানার এসআই মো. মাসুদ মুন্সী রিমান্ড আবেদনে বলেন, শওকত মাহমুদের নির্দেশে গত ৩ ফেব্রুয়ারি মহানগর নাট্যমঞ্চের সামনে শিকড় পরিবহনের একটি বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে আগুন দেওয়া হয়। বাস চালক ও যাত্রীদের হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়েছিল।

অন্য মামলার রিমান্ড আবেদনে পল্টন থানার এসআই মো. আব্দুল জলিল বলেন, এই আসামির নির্দেশে, প্ররোচনায়, হুকুমে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা পুরানা পল্টনের রোকেয়া ম্যানশনের সামনের রাস্তায় পুলিশকে লক্ষ্য করে হাতবোমা ফাটায় ও একটি ট্যাক্সিক্যাবে আগুন দেয়।

পল্টন থানার অন্য মামলাটিতে তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, স্কাউটস ভবনের দক্ষিণ দিকে ভিআইপি রোডের ওপর অটোরিকশায় পেট্রোল বোমা ছুড়ে চালক এবং যাত্রীকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।

সবকটি রিমান্ড আবেদনেই শওকত মাহমুদকে ওই সব ঘটনার নির্দেশদাতা বলা হয়েছে।এসব মামলায় দণ্ডবিধির, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।