এবার বর্জন করলে বিএনপির অস্তিত্ব থাকবে না: আশরাফ

দশম সংসদ নির্বাচনের মতো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও যদি বিএনপি বর্জন করে, তাহলে দলটি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক গোপালগঞ্জ থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2015, 10:21 AM
Updated : 1 August 2015, 12:25 PM

পরবর্তী নির্বাচনও বর্তমান সরকারের অধীনে হবে- তার আগের দিনের এই বক্তব্যে বিএনপির হতাশা প্রকাশের মধ্যে শনিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এই মক্তব্য এল।

৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে আসা বিএনপি ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবিতে সংলাপ আহ্বান করে শনিবারই সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন। 

এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর আশরাফ সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচন বর্জন এখন আর রাজনীতিতে কার্যকর না।

“আবার যদি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে তাদের অস্তিত্বই থাকবে না।”

বিএনপির বর্জনের মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মহলে যে প্রশ্ন রয়েছে সে প্রসঙ্গে আশরাফ বলেন, “আগামী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এই নির্বাচন রাজনৈতিক ইস্যু হিসাবে থাকবে।”

৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয় বলে বিএনপি দাবি করে আসছে। একইমত পোষণকারী নাগরিক সমাজের মধ্য থেকে সব দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচনের একটি রূপরেখা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমের খবর।

এই বিষয়ে আশরাফ বলেন, “আমরা বারবার বলেছি, আগামী নির্বাচন হবে বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী। আমরা আশা করি, সবাই সেই নির্বাচনে অংশ নেবে।”

“নির্বাচন বর্জন করলে কোনো লাভ হবে না,” মন্তব্য করে সব রাজনৈতিক দলকে তাতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র। 

“আপনি যদি জেনেও যান আপনার নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাহলেও আপনার নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত।”

এই প্রসঙ্গে সামরিক সরকারের অধীনে নিজ দলের নির্বাচনে অংশে নেওয়ার ইতিহাসও তুলে ধরেন আশরাফ।

“আওয়ামী লীগ ইয়াহিয়া, জিয়া এবং এরশাদের সামরিক সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।”

বিএনপিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে আশরাফ বলেন, “আপনারা আসুন, আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। আমরা আশা করি, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।”

আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সংশয়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনই কারচুপির নির্বাচন হয় নাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রমাণ করবেন, আগামী নির্বাচনও অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।”

১৫ অগাস্ট বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জন্মদিন পালন না করার পরামর্শও দেন আশরাফ।

মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনার যে কথা গণমাধ্যমে এসেছে, তা নাকচ করলেও জনপ্রশাসনমন্ত্রী আশরাফ বলেন, সরকার প্রধান চাইলে যে কোনো সময় নির্বাচন হতে পারে।

“মধ্যবর্তী নির্বাচন করার কোনো আলোচনাই আমাদের দলের মধ্যে হয় নাই। প্রধানমন্ত্রীও এই বিষয় নিয়ে আমার সাথে আলোচনা করেন নাই।”

সরকার প্রধানের সাংবিধানিক ক্ষমতার কথা তুলে ধরে আশরাফ বলেন, “উনি যদি প্রয়োজন মনে করেন, যে কোনো সময় হবে। না হলে যথা সময়ে হবে। উনি ইচ্ছা করলে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতেও পারেন, নাও পারেন।”

তবে আওয়ামী লীগ নির্দিষ্ট সময়েই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক আশরাফ।

“আমরা বলেছি, পাঁচ বছরের মাথায় দেশে অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। প্রধানমন্ত্রীও সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।”

১৫ অগাস্ট পালনে ৪০ দিনের কর্মসূচির প্রথম দিন বৃষ্টির মধ্যে ঢাকা থেকে বাসে চড়ে দলীয় নেতাদের নিয়ে গোপালগঞ্জে এসে জাতির জনকের সমাধিতে ফুল দেন আশরাফ।

এভাবে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতেই সবাই একসঙ্গে বাসে এসেছেন এবং ফিরে যাচ্ছেন।