খালেদা নয়, আপসহীন আমরা: এরশাদ

দলের নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়াকে আপসহীন দেখে এলেও তার সাম্প্রতিক তৎপরতায় কোনো প্রতিফলন দেখছেন না বিএনপিবিহীন সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2015, 01:16 PM
Updated : 30 July 2015, 01:16 PM

উল্টো নিজেদের আপসহীন বলে দাবি করেছেন দুই যুগ আগে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এই সামরিক শাসক; যাকে হটানোর আন্দোলনের নেতৃত্বে খালেদা জিয়াও ছিলেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে দৃশ্যত সরে এসে যে কোনো নামে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্যে আপসের ইঙ্গিত দেখছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ। 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর রিং রোডে সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয় পার্টির এক ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “বেগম জিয়া আপসহীন নেত্রী হিসেবে পরিচিত। তিনি কেমন আপসহীন বুঝলাম না।

“নির্বাচনের (৫ জানুয়ারি) আগে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অনড় ছিলেন, কিছুদিন আগে বললেন নিরপেক্ষ সরকার চান; এখন শুনছি আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যেতে তার আপত্তি নেই। তো, কোথা থেকে কিভাবে তিনি আপসহীন হলেন?”

“বিএনপি আপসহীন নয়, আপসহীন আমরা। কারণ আমরা যা বলি, তা করি,” বলেন এরশাদ, বার বার অবস্থান পরিবর্তনের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গনে বহুল আলোচিত যিনি। 

এখন বিরোধী দলে বসে সরকারের আংশিক ভাগ নিলেও অদূর ভবিষ্যতে এককভাবে সরকার গঠনের পর্যায়ে জাতীয় পার্টি যাবে বলে নেতা-কর্মীদের কাছে নিজের আশাবাদ তুলে ধরেন এরশাদ। 

“মানুষ সন্ত্রাস, হানাহানি চায় না। মানুষ এখন এই দুই দলের বৃত্ত থেকে বের হতে চায়। এই পরিবর্তন আনতে পারে জাতীয় পার্টি। আমি নয় বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলাম। এই দেশের জন্য কী কী করেছি বলে শেষ করা যাবে না। এই কারণেই মানুষ জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।”

“তোমরা মানুষের কাছে যাও, দলকে শক্তিশালী কর। সামনের নির্বাচনে যেন আমরা জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে পারি,” নেতা-কর্মীদের বলেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।

এরশাদের বয়স কত?

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “আমাদের আজকের সভার মধ্যমনি জাতীয় পার্টির মাননীয় চেয়ারম্যানের বয়স কত আপনারা জানেন? তার এখন ৮৬ বছর চলছে……”

এ সময় এরশাদকে স্মিত হাসতে দেখা গেলেও পাশ থেকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু তাকে কিছু একটা বলেন।

চুন্নু তখন বাবলুর দিকে তাকিয়ে বলেন, “আচ্ছা, ৮৬ না, ৫০…না না, ৫০ ও না, ৪০ ঠিক আছে?”

এরপর চুন্নু বলেন, “স্যারের বয়স যা ই হোক…আমি মাঝে মাঝেই ভাবি, যে বয়সে মানুষ বাঁচে না, সেখানে স্যার কিভাবে এতটা কর্মক্ষম, প্রাণচঞ্চল আছেন? আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই, কিন্তু পরক্ষণেই আমার মনে পড়ে- স্যারের সঙ্গে কোটি কোটি মানুষের দোয়া আছে, এ কারণেই কোনো বিপদ তাকে স্পর্শ করে না।”

বয়স প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, “জাতীয় পার্টি জনগণের রাজনীতি করে। এই বয়সের কারণেই আমি এত বছর ধরে মানুষকে ভালবাসতে পেরেছি, মানুষের ভালোবাসাও পাচ্ছি।”