ঝুঁকিপূর্ণ ভূমিকম্প এলাকায় ভারতের ৩৮ নগরী

ভারতের অন্তত ৩৮ টি নগরী উচ্চ-ঝুঁকির সিসমিক জোনে এবং উপমহাদেশের ৬০ শতাংশ দ্বীপ ভূমিকম্পের ঝুঁকির মুখে আছে।

>>আইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2015, 03:29 PM
Updated : 27 April 2015, 03:29 PM

দিল্লি মেট্রো ছাড়া ভারতের রাতারাতি বেড়ে ওঠা শহরগুলো ভূমিকম্পের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকির মুখে আছে।

নেপালে ঘটে যাওয়া গত শনিবারের ভূমিকম্পে প্রকম্পিত হয়েছে ভারতও। আগ্রা, শিলিগুঁড়ি পর্যন্ত স্থানে ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভূমিকম্পের কথা বিবেচনায় নিয়ে সে অনুযায়ী নকশায় ভারতে ভবন খুব কমই বানানো হয়। দিল্লি মেট্রো কাঠামোর মত এমন খুব কম সংখ্যক কাঠামোই ভারতে আছে যেগুলো ভূমিকম্পের মুখে টিকতে পারে।

২০০১ সালে গুজরাটে ভূমিকম্পের পর ভুজ শহরে গড়ে ওঠা অনেক বাড়িই এখন ভূমিকম্প-প্রতিরোধী।

কিন্তু ১৯৯৩ সালের পর থেকে তেমন কিছুই পরিবর্তন হয়নি। ওই সময়ে ভূমিকম্পের অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা মহারাষ্ট্রের লাতুরে মাঝারি মাত্রা ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পেই প্রায় ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। দুর্বলভাবে নির্মিত বাড়ি প্রথম কম্পনেই ধসে পড়ে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

আজকের ভারত সরকার মাঝারি থেকে উচ্চ-ঝুঁকির সিসমিক জোনে ৩৮ টি নগরীকে তালিকাভুক্ত করেছে। এই নগরীগুলোর ঘরবাড়ি ভূমিকম্প-প্রতিরোধী নয় বলে জানানো হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ প্রতিবেদন ২০০৬-এ। ফলে ভূমিকম্প হলে এ নগরীগুলোরই কোনোটি বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

এশিয়া মহাদেশে সাধারণত মাটির গভীরে প্লেটে প্লেটে সংঘর্ষের ফলে সৃষ্ট ভূ-আলোড়ন থেকেই সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প হয়ে থাকে। প্লেটে প্লেটে ছোট সংঘর্ষগুলো টের পাওয়া যায় না। কিন্তু বড় সংঘর্ষগুলোই বিপর্যয় ঘটিয়ে দিয়ে যায়।

ভূগর্ভস্থ যে প্লেটগুলোর ওপরে অবস্থান করছে মহাদেশ ও মহাসাগরগুলো তার মধ্যেই ভারত অংশ ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সংযোগস্থলে সংঘর্ষের ফলে হয়েছে নেপালের ভূমিকম্প। হিমালয় এবং উত্তর ভারত এরকমই ভূ-গর্ভস্থ প্লেটের সংঘর্ষের ঝুঁকির মুখে আছে। ভারতের প্রায় ৬০ শতাংশই ভূমিকম্পের এ ঝুঁকিতে আছে।

ভারতে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ইতিহাস আছে ২০০১ সালের গুজরাটের ভূমিকম্প এবং ২০০৪ সালের সুনামি। দিল্লি ঝুঁকিপূর্ণ ৪ সিসমিক জোনে অবস্থান করলেও দেশটির কোনো মেট্রোপলিটন নগরীই মারাত্মক ভূমিকম্পের কবলে পড়েনি। শ্রীনগর এবং গোয়াহাটি আছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে জোন-৫ এবং মুম্বাই, চেন্নাই ও কলকাতা জোন-৩ এ।

ইতিহাস থেকে এ সতর্কবার্তাই পাওয়া যায় যে, বড় ধরনের আরেকটা ভূমিকম্প যে কোনো সময়ই ঘটতে পারে। ১৯৩৪ সালে বিহারে এবং ১৯৫০ সালে আসামে মারাত্মক ভূমিকম্প হয়েছিল। মারা গিয়েছিল আট হাজার ১শ’ মানুষ।

 ১৯৫০ সালে আসামের ভূমিকম্প থেকে ভৌগলিকভাবে হিমালয়ে সত্যিকার অর্থেই বড় ধরনের ভূমিকম্পের পট প্রস্তুত হয়, বলছেন ভূতত্ববিদরা। সে ভূমিকম্পের ৬৫ বছর পার হয়ে গেছে, এখন খুব সম্ভবত সময় হয়ে এসেছে আরেকটি বড় ভূমিকম্পের।