বর্ধমান বিস্ফোরণ: সন্দেহভাজন জেএমবি সদস্য আটক

পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সন্দেহভাজন এক নেতাকে আটকের কথা জানিয়েছে ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পুলিশ। 

কলকাতা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2015, 05:30 AM
Updated : 20 April 2015, 05:46 AM

জেলার পুলিশ সুপার অনুপ বীরঠারে জানান, শনিবার রাতে রাজ্যের পাকুর জেলা থেকে ইব্রাহিম শেখ ওরফে লাল মোহাম্মদ নামের ওই জঙ্গিকে আটক করা হয়।

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে তথ্য বিনিময়ের পর ইব্রাহিমের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয় ঝাড়খণ্ড পুলিশ।

অনুপ জানান, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড ও বাংলাদেশ লাগোয়া তিলভিটা রেলস্টেশনের বাইরে থেকে ইব্রাহিমকে আটক করা হয়।

তার কাছে একটি রিভলবার, ছয়টি গুলি, চারটি পেট্রোল বোমা এবং কিছু জিহাদি বই পাওয়া গেছে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

এর আগে পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ডের মাঝামাঝি একটি রেলস্টেশন থেকে রেজাউল শেখ নামে এক জঙ্গিকে আটক করেছিল এনআইএ।

২০১৪ সালের ২ অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে বিস্ফোরণে দুইজন নিহত হওয়ার পর এর সঙ্গে জেএমবির নাম আবার জোরেশোরে উচ্চরিত হতে থাকে। নিহত দুইজনও জেএমবির সদস্য ছিলেন বলে দেশটির পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দাবি।

ওই বছরের ৯ অক্টোবর ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার পায় এনআইএ। তদন্তের জন্য এনআইএ কর্মকর্তারা বাংলাদেশেও ঘুরে যান।

তদন্তে নেমে ভারতের তদন্ত সংস্থা এনআইএ বাংলাদেশে জেএমবির বড় ধরনের হামলার মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের পরিকল্পনার কথা জানতে পারেন। ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মোট ১১ জনকে। তাদের কয়েকজন সহযোগী বাংলাদেশেও গ্রেপ্তার হন।

পুলিশ কর্মকর্তা অনুপ বলেন, “আটক ইব্রাহিম ভারতে জেএমবির প্রধান সাজিদ শেখের ডান হাত ছিলেন। গতবছর নভেম্বরে সাজিদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর ভারতে জেএমবির কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব পান ইব্রাহিম।”

ভারতীয় পুলিশ বলছে, ইব্রাহিম একসময় মুর্শিদাবাদে ‘ফাতিমা-উল-জাহরা’ নামে একটি মাদ্রাসা চালাতেন। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে কর্মী সংগ্রহের পর ওই মাদ্রাসাতেই দেওয়া হত জঙ্গিবাদের দীক্ষা।

ইব্রাহিম পরে বর্ধমানে জেএমবির বোমা তৈরির নেটওয়ার্কেও জড়ান বলে ভারতীয় গোয়েন্দাদের তথ্য।   

অনুপ বলেন, “পলাতক অবস্থাতেও ইব্রাহিম ঝাড়খণ্ডে ডজনখানেক মুসলিম কিশোরকে জেএমবির কর্মী হিসাবে বাছাই করেছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।”

২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট বাংলাদেশজুড়ে একযোগে বোমা হামলা চালিয়ে আলোচনায় আসে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি। আদালতের রায়ে সংগঠনটির কয়েকজন শীর্ষনেতাকে ফাঁসিতেও ঝোলানো হয়।

গতবছর ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশ হত্যা করে বন্দি তিন নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জেএমবির আবার সক্রিয় হয়ে ওঠার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।