সোমবার ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সম্মেলনে বাংলাদেশের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে সুমিত্রা এই আশা প্রকাশ করেন বলে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ডেপুটি স্পিকার বাংলাদেশের স্বাধীনতাযু্দ্ধে ভারতের সহোযোগিতা ও সিপিএ নির্বাচনে বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহয়োগিতার জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানান।
এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতেও তিনি আহ্বান জানান বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
জবাবে ভারতের লোকসভার স্পিকার বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরে তিস্তা চুক্তিসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তবে মোদী কবে নাগাদ বাংলাদেশে আসতে পারেন, সে বিষয়ে কিছু সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
১৯৭৪ সালের স্থল সীমান্তচুক্তি অনুযায়ী ছিটমহল বিনিময়ের জন্য মনমোহন সিংয়ের ওই সফরে একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। বিষয়টি কার্যকর করতে ভারতের সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও সে সময় বিরোধী দলে থাকা নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি এবং মমতার দল তৃণমূল সংগ্রেস এর বিরোধিতা করে।
গতবছর বিজেপি ভারতের ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধানে উদ্যোগী হন মোদী। এরপর নানামুখি চাপে থাকা মমতাও স্থলসীমান্ত চুক্তির বিষয়ে সম্মতি দেন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা সফরে এসে এ বিষয়গুলো নিয়ে আশার কথা শুনিয়ে যান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তিস্তার পানি বণ্টনসহ দ্বিপক্ষীয় সব বিষয়ের নিষ্পত্তিতে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করে সম্প্রতি মমতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবর।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সঙ্গে লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য মো. নবী নেওয়াজ, এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মিলন, আবুল কালাম আজাদ, ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, কাজী রোজী ও রাজী মো. ফখরুল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ডেপুটি স্পিকার ভুটান ও মালদ্বীপের স্পিকারের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
এর আগে আইপিইউ’র কো-অর্ডিনেটিং কমিটি অব উইমেন পার্লামেন্টারিয়ানসের শূণ্য পদে সংসদ সদস্য বেগম ওয়াসেকা আয়েশা খান ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির সদস্য পদে আবুল কালাম আজাদকে নির্বাচিত করা হয়।
সম্মেলন চলাকালে ওআইসি দেশগুলোর পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (পিইউআইসি) সঙ্গে এক বৈঠকে ডেপুটি স্পিকার বলেন, “ইসলামের নামে সকল প্রকার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বন্ধ করতে হবে। ইসলাম সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কখনো সমর্থন করে না। সকল প্রকার সন্ত্রাস বন্ধে সংসদ সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এ বিষয়ে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।”
এ ধরনের সন্ত্রাসের বিপক্ষে বিশ্ব জনমত গড়ে তোলারও আহ্বান জানান তিনি।
ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সম্মেলনে যোগ দিতে গত ২৬ মার্চ ঢাকা ছাড়ে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রতিনিধি দল।