প্রথমবারের মতো সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে এ জোটের দেশগুলোর জন্য ভারতের ভিসা সহজলভ্য করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বুধবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অষ্টাদশ সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে বক্তব্য দেন নরেন্দ্র মোদী।
চিৎিসার জন্য রোগী ও তার এক সঙ্গীর জন্য তাৎক্ষণিক চিকিৎসা ভিসা ছাড়াও ব্যবসায়ীদের জন্য ৩ থেকে ৫ পাঁচ বছর মেয়াদী ভিসা দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
দক্ষিণ এশিয়ায় যোগাযোগ বৃদ্ধিতে অবকাঠামো উন্নয়নে ভারতের অর্থায়নের প্রতিশ্রুতিও তিনি দেন।
এ অঞ্চলের উন্নয়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়ে মোদী বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় সমন্বিত উদ্যোগ যতোটা জরুরি, বর্তমান বিশ্বের আর কোথাও ততোটা জরুরি নয়।”
সার্ক নিয়ে ‘হতাশা ও সংশয়’ রয়েছে- মন্তব্য করে উপস্থিত রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের উদ্দেশ্যে নরেন্দ্র মোদী বলেন, “এই নৈরাশ্যকে আশাবাদে রূপান্তর করতে আমাদের অবশ্যই কাজ করতে হবে।”
নরেন্দ্র মোদী বলেন, ভবিষ্যৎ ভারত নিয়ে তিনি যে স্বপ্ন দেখেন পুরো সার্ক অঞ্চলে যেন তার বাস্তবায়ন ঘটে তিনি সে প্রার্থনা করেন।
“আমাদের একে অন্যের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে- একসঙ্গে অনেক কিছু করারও আছে। আমি জানি ভারতকেই নেতৃত্ব দিতে হবে এবং আমরা আমাদেরটা করব। আমি আশা করি আপনারাও তা করবেন,”
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের আঞ্চলিক জোট সার্ক। এই জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ২০০৮ সালে ১৪০ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যের জায়গায় ২০১২ সালে তা বেড়ে ৮৭৮ ডলারে পৌঁছেছে। তবে এখনো তা এই অঞ্চলের মোট বাণিজ্যের পাঁচ শতাংশেরও কম।
এ বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করে মোদী বলেন, অবাধ বাণিজ্য চুক্তি থাকার পরও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাঁচ শতাংশেরও কম বাণিজ্য হয়।
“ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুর যাওয়ার চেয়ে আমাদের অঞ্চলে ভ্রমণ এখনো কঠিন।”
অবকাঠামোকে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দুর্বল জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করে মোদী বলেন, “আমি যখন সড়ক পথে কাঠমান্ডু আসার কথা চিন্তা করলাম তখন সীমান্তের রাস্তার কথা ভেবে অনেক কর্মকর্তা শঙ্কিত হয়ে পড়লেন।”
অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, এখন ভারতের পাঞ্জাব থেকে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে পণ্য আনা নেওয়ার জন্য নয়া দিল্লি, মুম্বাই, দুবাই ও করাচি হয়ে আসতে হয়, যা যাত্রাপথকে ১১ গুণ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যয় চারগুণ বাড়িয়ে দেয়।
বিশেষ ‘বিজনেস’ ও ‘মেডিকেল’ ভিসার ঘোষণা দিয়ে জোটভুক্ত দেশগুলোর প্রতি ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং কাগজপত্রের ঝামেলা কমিয়ে আনার আহ্বান জানান নরেন্দ্র মোদী।
“সীমান্তে আমাদের কার্যক্রম গতিশীল করার প্রতিশ্রুতি আমি দিচ্ছি”, বলেন তিনি।