জঙ্গি দমনে কঠোর হওয়ার দাবি বিজেপির এমপির

বর্ধমান বিস্ফোরণের পর ভারতের মাটিতে জঙ্গি তৎপরতা বিষয় নিয়ে ভারতের লোকসভায় আলোচনা হয়েছে। 

নয়াদিল্লি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2014, 06:41 PM
Updated : 25 Nov 2014, 06:41 PM

ভারতীয় ভূখণ্ডে, বিশেষ করে আসামে জঙ্গিদের তৎপরতা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে মঙ্গলবার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন লোকসভায় রাজ্য বিজেপির প্রতিনিধি রমেন দেকা। 

এসময় তিনি আসামে জঙ্গি তৎপরতাকে ‘ভয়ঙ্কর’ অভিহিত করে বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তুলে ধরারও দাবি জানান।

বর্ধমান বিস্ফোরণের পর আসামসহ ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে জঙ্গি গ্রেপ্তারের উদাহরণ টেনে রমেন দেকা বলেন, “মৌলবাদি এবং জিহাদি সংগঠনগুলো আসামে তাদের নেটওয়ার্ক বাড়াচ্ছে।”

গত ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে একটি বাড়িতে বিস্ফোরণে দুজন নিহত হওয়ার পর ভারতে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির তৎপরতার বিষয়টি উঠে আসে।

ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে শেখ রহমতুল্লাহ সাজিদ ও জিয়াউল হক নামে দুই ব্যক্তিকে পরে গ্রপ্তার করা হয়।

সাজিদকে বাংলাদেশি এবং জেএমবির কমান্ডার আর জিয়াউলেরও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার দাবি করেন গোয়েন্দারা।

এছাড়া আসাম থেকেও সাজিনা বেগম নামে ৩০ বছর বয়সী এক নারীকে আটক করা হয়, যার স্বামী শাহানূর আলমের বিষয়ে তথ্য দিতে এনআইএ ৫ লাখ রুপি পুরষ্কার ঘোষণা করেছে।

বর্ধমানের যে বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে, সেখান থেকে দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছিল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ; যারা জেএমবির সঙ্গে যুক্ত এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাড়ি জমিয়েছিলেন বলে ভারতের গোয়েন্দাদের দাবি।

বর্ধমান বিস্ফোরণের তদন্তে তারা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে হত্যায় জঙ্গিদের একটি পরিকল্পনার কথা জানতে পারার দাবি করেছে গোয়েন্দারা।

বিস্ফোরণের পরপরই ভারতের জাতীয় জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআই) বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সঙ্গে জড়িত সন্দেহে অন্তত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।

এসব বিষয় সামনে এনে বিজেপির এমপি রমেন দেকা বলেন, “বর্ধমান বিস্ফোরণের পর এনআইএ আসাম থেকে গ্রেনেড ও বোমাসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। 

“আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে আহ্বান জানাব, বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণ করতে। এতে মানুষ নিরাপদ বোধ করবে এবং দেশের ঐক্য ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে না।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপকালে রমেন আসামে জঙ্গি তৎপরতার বেড়ে যাওয়ায় রাজ্য সরকারকে দায়ী করেন।

তিনি অভিযোগ করেন, তরুণ গগৈর নেতৃত্বে আসাম রাজ্য সরকার সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে।

“সম্প্রতি আসামের বারপেতা জেলা থেকে ইসলামি মৌলবাদীদের গ্রেপ্তারের মধ্যে দিয়ে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা অবনতির প্রমাণ মেলে।”

তবে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এরই মধ্যে আসামে জিহাদি কর্মকাণ্ডের বিষয়ে অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছে বলে জানা গেছে। তারা কিছু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাও চিহ্নিত করেছে।

সীমান্ত পাড়ি দিয়ে জঙ্গিদের ভারতীয় ভূখন্ডে আস্তানা গড়ার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তুলে ধরার দাবি জানিয়ে রমেন দেকা বলেন, “সীমান্তে অনুপ্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করা উচিত কারণ উগ্রবাদীরা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এ দেশে ঢুকছে।”