অন্ধ্র উপকূলে আঘাত হেনেছে হুদ হুদ

প্রায় ২০০ কিলোমিটার বেগের বাতাস আর তুমুল বৃষ্টি নিয়ে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তমে আঘাত হেনেছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হুদ হুদ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2014, 06:14 AM
Updated : 12 Oct 2014, 06:14 AM

ভারতীয় নৌবাহিনীর বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে ঘূর্ণিঝড়ের বাইরের অংশ বিশাখাপত্তমের কৈলাসগিরি এলাকায় আঘাত হানে।

ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর বলছে, হুদ হুদের বিস্তার প্রায় ৩০ কিলোমিটার। 

ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জোয়ারের আশঙ্কায় উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলীয় এলাকা থেকে চার লাখ মানুষকে ইতোমধ্যে সরিয়ে নিয়েছে ভারত সরকার।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিশাখাপত্তম ও উড়িষ্যার গানজাম এলাকায় প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

ঝড়ো হওয়ায় বিশাখাপত্তমে গাছ ও বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। তার ছিঁড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।

প্রবল বৃষ্টিতে দৃষ্টিসীমা ৫শ’ মিটারের নিচে নেমে আসায় বেশ কয়েকটি বিমান ও ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।

ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ বলছে, স্থলভাগে আঘাত হানার পর আরো ছয় ঘণ্টা তাণ্ডব চালাতে পারে হুদ হুদ। পরবর্তী ছয় ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে আসতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ছত্তিশগড় ও উড়িষ্যার উত্তরাঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও দক্ষিণ উড়িষ্যায়ও ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর কয়েকটি দলকে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ চালানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভারতীয় কোস্ট গার্ডের ১৭টি জাহাজ, নয়টি বিমান এবং ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের ৪৪টি দলের ২ হাজার উদ্ধারকর্মীকে উপদ্রুত অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ে হতাহতের ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলোর সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, “অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দর সমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে।”

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১ থেকে ৩ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

</div>  </p>