রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে জাতিসংঘে যা বলল মিয়ানমার

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মধ্যে মিয়ানমার জাতিসংঘে বলেছে, নিরীহ বেসামরিক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি এড়াতে ‘সব ব্যব্স্থা’ নিতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছে তাদের সরকার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2017, 08:35 AM
Updated : 21 Sept 2017, 08:54 AM

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের চলমান সাধারণ অধিবেশনে বুধবার দেশটির উপ-রাষ্ট্রপতি হেনরি ভান থিও একথা বলেন।

তিনি বলেন, “শুধু রাখাইনের মুসলনমানরাই পালিয়ে (বাংলাদেশে) যায়নি, অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্যরাও গেছে।”

সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমার সরকার ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ জানিয়ে ভান থিও বলেন, “অভিযান পরিচালনার সময় নিরীহ বেসামরিক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি এড়াতে বাহিনীগুলোকে আচরণবিধি মেনে চলতে ও সংযম বজায় রাখতে সব ব্যবস্থা নেওয়ার কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

রাখাইনে সেনা অভিযানে প্রাণ বাঁচাতে সোয়া চার লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। নির্যাতন বন্ধে পদক্ষেপ না নেওয়ার আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনায় থাকা মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি এবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেননি।

জাতিসংঘ ওই সেনা অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। মঙ্গলবার রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি সু চি।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে মিয়ানমারের উপ-রাষ্ট্রপতি হেনরি ভান থিও। ছবি: রয়টার্স

ভাষণে রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ না করা সু চি ৫ সেপ্টেম্বরের পর রাখাইনে কোনো ধরনের সহিংসতা বা নির্মূল অভিযান হয়নি বলে যে দাবি করেছেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সেই কথার পুনরাবৃত্তি করেন মিয়ানমারে উপ-রাষ্ট্রপতি ভান থিও।

“রাখাইনের মুসলনমানদের দলে দলে দেশান্তরী হওয়ার পেছনের কারণ আমাদের খুঁজে বের করা প্রয়োজন,” বলেন তিনি।

২৪ অগাস্ট রাতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে হামলার পর পাল্টা অভিযানে অসংখ্য বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া ছাড়াও ধর্ষণ ও নিরীহ মানুষজনকে নির্বিচারে গুলি করে ও গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।

উপ-রাষ্ট্রপতি ভান থিও জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে সহিংসতায় নিহতদের পরিবারের পাশাপাশি বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের প্রতিও গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।

রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ‘যথাযথ বিচারিক রীতি অনুযায়ী’ সামাল দেওয়া হয়ে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো বৈষম্য না করে যাদেরই দরকার’ তাদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা সরকার বুঝতে পারছে।

ভান থিও জানান, সঙ্কট সমাধানে কফি আনান নেতৃত্বাধীন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর অধীনে একটি কমিটি হয়েছে। মিয়ানমার ও তার বাইরে থেকে ‘নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের’ নিয়ে সরকার আরেকটি উপদেষ্টা বোর্ড গঠন করবে।

প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কন্নোয়নে মিয়ানমার কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে বক্তব্যে তিনি বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মিয়ানমারে স্বাগত জানাতে চায় তার দেশ।