সাহারার অ্যাম্বি ভ্যালি নিলামে তোলার নির্দেশ

ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী সুব্রত রায় বিনিয়োগকারীদের পাওনা ৫০৯২ কোটি রুপি নির্ধারিত সময়ে ফেরত দিতে না পারায় সাহারা গ্রুপের অভিজাত আবাসন প্রকল্প অ্যাম্বি ভ্যালি নিলামে তোলার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2017, 10:53 AM
Updated : 17 April 2017, 10:54 AM

পুণের কাছে ৩৯ হাজার কোটি রুপি বাজারমূল্যের ওই সম্পত্তি নিলামে বিক্রির জন্য আদালত বোম্বাই হাই কোর্টের একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিচারপতি দীপক মিশ্র নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়। 

৬৮ বছর বয়সী সুব্রত রায়কে আগামী ২৭ এপ্রিল আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বিচারক বলেন, আদালত যথেষ্ট সময় দিয়েছে, এরপরও টাকা ফেরত দিতে না পারলে তাকে আবার জেলে যেতে হবে। 

নিয়ম ভেঙে প্রায় ৩০ লাখ বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে বন্ড স্কিমে নেয়া প্রায় ২৪ হাজার কোটি রুপি ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১২ সালে সাহারা গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করে ভারতের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড।

ওই মামলায় ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ভারতীয় আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। ২২ দিন তিহার জেলে কাটানোর পর কিস্তিতে টাকা শোধের শর্তে মুক্তি পান তিনি।

এরপর কয়েক কিস্তিতে মোট টাকার একটি বড় অংশ আমানতকারীদের ফেরত দেওয়া হলেও বাকি টাকা পরিশোধের জন্য ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত সময় চায় সাহারা গ্রুপ।

কিন্তু ওই আর্জি নাকচ করে গত ৬ মার্চ ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সাহারার অ্যাম্বি ভ্যালি এবং অন্যান্য স্থাবর সম্পত্তির তালিকা জমা দিতে হবে।

এরপর ২২ মার্চ আরেক আদেশে বলা হয়, ১৭ এপ্রিলের মধ্যে সুব্রত রায় টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে সম্পত্তি নিলাম করে সাহারার দায় মেটানো হবে।

ওই হুঁশিয়ারির পরও সুব্রত রায়ের কোম্পানি টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সোমবার অ্যাম্বি ভ্যালি নিলামে তোলার আদেশ এল। 

সুব্রত রায় সাহারা ১৯৭৮ সালে ‘সাহারা ইন্ডিয়া পরিবার’ প্রতিষ্ঠা করেন। মহারাষ্ট্রের লোনাভালা থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের ওপর ৮৯০০ একর জমিতে গড়ে তোলা উপশহর অ্যাম্বি ভ্যালিকে বলা হয় সাহারার মুকুটের সেরা রত্ন। 

আবাসন প্রকল্প দিয়ে শুরু হলেও ধীরে ধীরে আর্থিক খাত, অবকাঠামো, সংবাদমাধ্যম, চলচ্চিত্র প্রযোজনা, স্বাস্থ্যসেবা, পণ্য উৎপাদন, ক্রীড়া এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতে সাহারার ব্যবসা ছড়িয়ে পড়ে।

টাইম ম্যাগাজিনের বিচারে, ভারতীয় রেলওয়ের পর জনশক্তির দিক দিয়ে সাহারা গ্রুপ দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান।

বাঙালি বংশোদ্ভূত সুব্রতর শিল্পগ্রুপ সাহারা বছর ২০১৪ সালে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পৃষ্ঠপোষকতাও করে।