বৃহস্পতিবার কলকাতায় অ্যাপোলো গ্লেনেগেলস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বলে আনন্দবাজারসহ কলকাতার বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।
ইন্ডিয়া ব্লুমস নামে একটি ইংরেজি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় আহত সঞ্জয় রায় নামে এক রোগীকে তার স্বজনরা চিকিৎসার মাঝপথে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে সাত লাখ ২৩ হাজার রুপির ‘পুরো ট্রিটমেন্ট ফি’ দেখিয়ে তা পরিশোধ করতে বলে অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ। তার আগে রোগীকে ছাড়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
সব অর্থ দেওয়ার সামর্থ্য নেই বলে সঞ্জয়ের স্ত্রী জানালে তাকে পরিবারের ব্যাংক ডিপোজিটের স্টেটমেন্ট জমা দিতে বলে তারা। পরে তাদের ব্যাংক স্টেটমেন্ট সংক্রান্ত সব কাগজপত্র দেওয়ার পর শেষ সময়ে রোগীকে ছাড়া হয়।
পরে সেখান থেকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নেওয়ার পর ওইদিন রাতেই মারা যান সঞ্জয়।
হুগলির যুবক সঞ্জয় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার পরিবারের অভিযোগ, বাইক দুর্ঘটনায় আহত সঞ্জয়কে ‘সিটি স্ক্যান’ করানোর নামে অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় ‘ভেন্টিলেশন’-এ দিয়েছিল অ্যাপোলো হাসপাতাল৷ এভাবে তার চিকিৎসার বিল করে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রুপি।
এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে সঞ্জয়কে কলকাতার সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএমে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে বিল নিয়ে টানাপড়েনের জেরে সেখানে নিতে দেরি হওয়ার কারণেই সঞ্জয়ের মৃত্যু হয় বলে স্বজনদের অভিযোগ।
সঞ্জয়ের স্ত্রী রুবি রায় অ্যাপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতি এবং জোর করে টাকা আদায়সহ থানায় একাধিক অভিয়োগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্তে নেমে কমিটি অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিৎসা সংক্রান্ত সব নথি, কোন টেস্টে কত খরচ, রোগীর কেইস হিস্ট্রি চেয়ে পাঠায়।
বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের মুখে অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ সঞ্জয়ের পরিবারের এফডি-র নথি এবং পরিবারের দেওয়া টাকা ফেরত দিতে চাইলেও ছাড় পায়নি তারা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ ঘটনাটি তদন্তে ছয় সদস্যের একটি কমিটি করে, যারা মঙ্গলবারই কাজ শুরু করেছে।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, রূপালি বসুর পদত্যাগের পর বিবৃতিতে অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ বলেছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে উন্নতমানের স্বাস্থ্য সেবা দিতে বেশ কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে তারা।