শুক্রবার আহমেদাবাদের বিশেষ আদালত এই রায়ে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি একজনকে ১০ বছরের ও ১২ জনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়।
উন্মত্ত হিন্দুদের ওই হামলায় নিহত মুসলিম রাজনীতিক ও কংগ্রেস পার্টির সাবেক এমপি এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরি আসামিদের মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা যেখান থেকে শুরু করেছিলাম, সেখানেই ফিরে গেলাম।”
নারী ও শিশুসহ যাদের লক্ষ্য করে সেদিন হামলা চালানো হয়েছিল, তাদের সবাই ‘নিরপরাধ মানুষ’ ছিলেন- এই যুক্তি তুলে ধরে আইনজীবীরা অভিযুক্ত ২৪ জনের সবার জন্যই মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলেন।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে হত্যাকাণ্ডের বিচারের ধারাবাহিকতা।
# ২০০২ সালে গুজরাটজুড়ে জ্বলে ওঠা মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় দুই মাসে সহস্রাধিক মানুষ নিহত হন, যাদের বেশির ভাগ মুসলিম।
# তার আগের দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরা স্টেশনে সবরমতী এক্সপ্রেসে আগুনে ৬০ জন করসেবক পুড়ে মরলে এই দাঙ্গার সূত্রপাত হয়।
# গুলবার্গ আবাসিক ওই নৃশংস হামলার সময় এহসান জাফরিকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। সাবেক ওই সাংসদ ভীত-সন্ত্রস্ত কণ্ঠে পুলিশ ও জ্যেষ্ঠ রাজনীতিকদের অনেককে ফোন করে সাহায্য চাইলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। তার স্ত্রী বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেও সাহায্য চেয়েছিলেন জাফরি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
# ৬৬ জনকে অভিযুক্ত করে ২০০৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর গুলবার্গ হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরুর পর পাঁচ জনের মৃত্যু হয় এবং একজন নিখোঁজ রয়েছে।
# বাকিদের মধ্যে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ২৪ জনকে গত ২ জুন দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ওই দিনই ৩৬ জনকে প্রমাণের অভাবে খালাস দেওয়া হয়, যা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারগুলোর মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।
# খালাস পাওয়াদের মধ্যে আছেন বিজেপি নেতা বিপিন পাটেল, যার বিরুদ্ধে উন্মত্ত ওই হামলায় ও হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
# 'পরিকল্পিত হামলা'র কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় ৬৬ জনের সবার বিরুদ্ধে আনা 'অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ' শুক্রবার খারিজ করে দেয় আদালত।
# ২০০৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট গুজরাট দাঙ্গার সময় সংঘটিত প্রধান যে ১০টি ঘটনার পুনঃতদন্তের দায়িত্ব পুলিশের কাছ থেকে বিশেষ তদন্ত দলের (এসআইটি) কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছিল, সেগুলোর অন্যতম গুলবার্গ হত্যাকাণ্ড।