‘মাকে মারে বাবা... এই আমাদের পরিবার’

“আমার বাবা ভীষণ খারাপ। নিয়মিতই মাকে মারে। আমি আর মা প্রতি রাতে কাঁদি। এই আমাদের পরিবার।”

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2016, 12:21 PM
Updated : 7 Feb 2016, 10:32 AM

ভারতের কলকাতায় স্কুলে শিশুকে লিখতে বলা একটি রচনায় উঠে এসেছে পারিবারিক নির্যাতনের এই চিত্র, যা বিস্মিত করেছে শিক্ষকদের।  

সল্ট লেকের ইংরেজি মাধ্যমের একটি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর এই রচনা দেখে স্কুল কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতে হয়েছে বলে টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় শনিবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ওই শ্রেণির সব শিক্ষার্থীকে পরিবার সম্পর্কে রচনা লিখতে বলা হয়েছিল, যাতে ১০ বছর বয়সী মেয়েটি লিখেছিল বাবার নির্যাতনের কথা।

“বাবা আমাকেও মারে। আমার চাচারা এসব শুনতে চায় না। আমাদের খেয়াল কেউ করে না,” এই বলেই রচনা শেষ করেনি শিশুটি।

শেষে লিখেছে, “আমি যখন বড় হব, তখন মাকে বাবার কাছ থেকে অনেক দূরে নিয়ে যাব।”  

যে শিক্ষক রচনা লিখতে দিয়েছিলেন, তিনি বলেন, “একটি শিশু নিজের মধ্যে কী বেদনা নিয়ে চলছে, তা আমি ভাবতেও পারি না। এটা সত্যিই আমাকে বিস্মিত করেছে।”  

“আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি, আমার কী করা উচিৎ। একটু ভেবে আমি প্রিন্সিপালকে জানাই। তারপর স্কুল কাউন্সেলরকে জানানোর সিদ্ধান্ত হয়,” বলেন ওই শিক্ষক।

এরপর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিশুটির বাবা-মাকে ডেকে আনেন বলে টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে।

যতদিন পর্যন্ত না তিনি শোধরান এবং বাবার উপর মেয়েটির বিশ্বাস ফিরে আসে, ততদিন পর্যন্ত ওই ব্যক্তিকে স্ত্রী-সন্তান থেকে আলাদা থাকার পরামর্শ দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শিশু মনের এই সহজ প্রকাশ নিয়ে মনোবিজ্ঞানী জয়ারঞ্জন রাম বলেন, “শিশুটির এই অনুভূতিকে শিশুসুলভ বলে উড়িয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সে তার অন্তর্জ্বালা প্রকাশ করেছে, এছাড়া তো তার প্রকাশের আর কোনো সুযোগ ছিল না।”

বিদ্যালয়টির প্রশংসা করে তিনি বলেন, “এটা সত্যিই প্রশংসনীয় যে এটুকু পরিবেশ তারা তৈরি করে দিতে পেরেছে, যাতে শিশুরা তাদের মনের চিন্তা-ভাবনা রাখঢাক না রেখে প্রকাশ করতে পারে।”