ভারতে একই স্থানে দুর্ঘটনায় দুই ট্রেন, নিহত ২৭

ভারতের মধ্যপ্রদেশের হারদা এলাকায় একটি ছোট সেতু পার হওয়ার সময় কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুটি ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়ে অন্ততপক্ষে ২৭ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2015, 03:15 AM
Updated : 5 August 2015, 06:16 AM

ভারতের ইংরেজি দৈনিক হিন্দুর খবরে বলা হয়, ভূপাল থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে খুদাভা রেল স্টেশনের কাছে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার পর এই দুর্ঘটনা ঘটে। 

মুম্বাই থেকে বারানসিগামী কামায়ানি এক্সপ্রেস মাচক নদীর ওপর ওই সেতু পার হওয়ার সময় ছয়টি বগি লাইন ছেড়ে বেরিয়ে যায়। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে উল্টো দিক থেকে আসা জাবালপুর থেকে মুম্বাইগামী জনতা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন ও চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়।

দুই ট্রেনের প্রায় ২৭ জন নিহত এবং ৪০ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে এনডিটিভির খবরে বলা হয়। রাতেই উদ্ধারকর্মীরা ট্রেন দুটি থেকে সরিয়ে নিয়েছেন প্রায় ৩০০ যাত্রীকে।

নিহতদের মধ্যে ১০ জন নারী ও পাঁচ শিশু রয়েছেন বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকার।

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ওই এলাকায় পানি জমে সেতুর লাইন দেবে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ভারতীয় রেলের মুখপাত্র অনিল সাক্সেনার ধারণা।

রেলের আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লাইনচ্যুত বগিগুলোর ভিতরে ঘটনাস্থলে জমে থাকা পানি প্রবেশ করেছে। আগের প্রতিবেদনগুলোতে বগিগুলো নদীতে পড়ে গেছে বলা হয়েছিল। 

রেলওয়ের চেয়ারম্যান একে মিত্তাল বলেছেন, আকস্মিক বন্যায় লাইন ডুবে গিয়ে নিচের মাটি সরে গেছে। পানির ঢেউ সেতুটিকে দুর্বল করে ফেলায় সেটি ধসে যায়।

এনডিটিভি জানিয়েছে, দুর্ঘটনার ১০ মিনিট আগে সেতুর লাইনগুলো অক্ষত আছে আর বেশ কয়েকটি ট্রেন নিরাপদে পার হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন মিত্তাল। 

ভারতের রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু এক ট্যুইটে বলেন, “তদন্ত কমিটি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ভারি বর্ষণে লাইন ডুবে এ ঘটনা ঘটেছে। পার্লামেন্টে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।”

ট্যুইটারে এক মন্তব্যে ট্রেন দুর্ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রাণহানির ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।

এনডিটিভি জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর রাতভর উদ্ধারকাজ চালাতে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রবল বৃষ্টিপাত ও বন্যায় সড়ক যোগাযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দলের পৌঁছতে বিলম্ব হয়।

বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রেলের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছে, লাইনচ্যুত বগিগুলোতে আটকা পড়া অধিকাংশ যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রেন দুটির অক্ষত বগিগুলোকে খুলে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তিনটি বিশেষ ট্রেনে করে চিকিৎসক ও উদ্ধারকারী দলগুলোকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।