রুশ তালেবান নেতা বললেন ‘আল্লাহর কাজ করছি’

ইরেক হামিদুল্লিন নামের অভিযুক্ত এক রুশ তালেবান নেতাকে আটক করার সময় তিনি নিজের পরিণতি শান্তভাবে মেনে নিয়েছিলেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে বলেছিলেন তিনি ‘আল্লার কাজ করছেন’। 

>>রয়টার্স
Published : 4 August 2015, 08:47 AM
Updated : 4 August 2015, 08:47 AM

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় এ কথা জানান সাবেক এক মার্কিন সেনা।

হামিদুল্লিন হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতে বিচারের মুখোমুখি হওয়া প্রথম আফগান যুদ্ধবন্দি। সাবেক এই সোভিয়েত ট্যাঙ্ক কমান্ডার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তালেবানের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।   

পঞ্চাশোর্ধ এই রুশ নাগরিকের বিরুদ্ধে ১৫টি ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এসবের মধ্যে ২০০৯ সালে আফগান সীমান্ত পুলিশের একটি ঘাঁটিতে হামলার সময় স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীদের সহায়তা করার অভিযোগও রয়েছে। 

আফগানিস্তানের খোস্ত প্রদেশের লেইজা ঘাঁটিতে চালানো বিদ্রোহীদের ওই হামলা প্রতিহত করার সময় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সেনা টড মারকাম হামিদুল্লিনকে গুলি করে আহত করেন। 

ওই সময়ে ঘটনা বর্ণনায় আদালতকে মারকাম বলেন, “তিনি তার হাত তুলে ধরে বলেন (ইংরেজিতে), ‘আমাকে মেরো না, আমি একজন রুশ নাগরিক। আত্মসমর্পণের পর তিনি বলেন, তিনি শুধু ‘আল্লাহর কাজ করছেন।’”

তালেবানের ওই হামলায় আফগান বা আমেরিকান কোনো সেনা নিহত হননি, অপরদিকে হামলাকারী ৩০ বিদ্রোহীর মধ্যে শুধু হামিদুল্লিনই বেঁচে ছিলেন। 
 
বর্তমানে পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় মৎস শিকারিদের গাইড হিসেবে কাজ করা মারকাম জানান, আত্মসমর্পণের আগে হামিদুল্লিন তার অস্ত্র ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন।   

আদালতে পর্দায় ওই লড়াইয়ে মারকামের গুলিতে আহত-রক্তাক্ত হামিদুল্লিনের একটি ছবি দেখানো হয়। 

আত্মসমর্পনের পর হামিদুল্লিনকে গ্রেপ্তার করে আফগানিস্তানে পেন্টাগনের হেফাজতে পাঁচ বছর বন্দি করে রাখা হয়। পরে অভিযোগের মুখোমুখি করার জন্য তাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়। 

সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, হামলা ব্যর্থ হওয়ার পর হামিদুল্লিন একটি মেশিনগান দিয়ে আফগান ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের লক্ষ করে গুলি চালান। সব অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে সারা জীবন কারাগারে থাকতে হবে। 
 আদালতে যুক্তরাষ্ট্রের হেলিকপ্টার থেকে তোলা ভিডিওতে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটক হেলিকপ্টারগুলো থেকে ছোঁড়া রকেট, বোমা ও ভারী মেশিনগানের গুলিতে হামিদুল্লিনের নেতৃত্বাধীন বলে কথিত বিদ্রোহী দলটির সবাই মারা যাচ্ছে। 
 
মারকাম ছাড়াও আদালতে আরো ছয়জন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষ্য দেন। এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হেলিকপ্টারের পাইলট, মেশিনগান চালক ও যুক্তরাষ্ট্র বাহিনীর এক কমান্ডার আছেন। 

বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই বিচার এক সপ্তাহ ধরে চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।