হট্টগোলে অচল লোক সভা, ২৫ এমপিকে বহিষ্কার

বিতর্কিত ললিত মোদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের ‘সহায়তা’ করা নিয়ে বিতর্কে গত কয়েক দিনের ধারাবাহিকতায় তুমুল হট্টগোল হয়েছে ভারতের লোক সভায়।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2015, 11:42 AM
Updated : 3 August 2015, 04:03 PM

সোমবার হট্টগোলে অধিবেশন চালাতে না পেরে এক পর্যায়ে লোক সভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন কংগ্রেসের ২৫ জন এমপিকে ৫ দিনের জন্য বহিষ্কার করেছেন বলে ভারতের গণমাধ্যম জানিয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের জন্য দিনটিকে গণতন্ত্রের জন্য ‘কালো দিন’ আখ্যায়িত করেছেন প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।

আগামী ৫ দিন অধিবেশন বর্জনের ঘোষণাও দিয়েছে কংগ্রেস। তাদের এই সিদ্ধান্তে সমর্থন দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস ও অরবিন্দ কেজরিওয়াল নেতৃত্বাধীন আম আদমি পার্টিও।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বিশৃঙ্খলার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করে অধিবেশন চালানোর পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলি কংগ্রেসের আচরণে হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, এই নেতিবাচক রাজনীতি দলটির ছাড়া উচিৎ। কারণ এতে আখেরে দেশেরই ক্ষতি।

লোক সভার চলতি বর্ষাকালীন অধিবেশনের শুরু থেকে কংগ্রেস সরব পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার পদত্যাগ দাবিতে। তবে সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে ক্ষমতাসীন বিজেপি।

সোমবার তুমুল হৈ চৈ শুরু হলে স্পিকার সুমিত্রা মহাজন ২৫ কংগ্রেস এমপির শাস্তি ঘোষণা করে অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়, প্রতিবাদ করতে গিয়ে সংসদ ভবনের ভেতরে প্ল্যাকার্ড বহন করা এবং কালো ব্যাজ ধারণ করা যাবে না বলে বার বার কংগ্রেস দলের সংসদ সদস্যদের সতর্ক করেছিলেন স্পিকার। এরপরও নির্দেশ না মানায় এ পদক্ষেপ নেন তিনি।

সুমিত্রা মহাজন বলেছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে কঠোর হওয়ার পক্ষপাতি না হলেও বাধ্য হয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন। 

স্পিকার সাংবাদিকদের বলেন, “এটা সবার জন্য একটি বার্তা। প্রতিবাদ করার অধিকার সবার আছে। গণতন্ত্রে সবারই নিজের বক্তব্য তুলে ধরার অধিকার আছে। কিন্তু কোথায়, কীভাবে প্রতিবাদ করতে হবে, তার নিয়ম কানুন আছে।”

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে মঙ্গলবার সর্বদলীয় পার্লামেন্টারি পার্টির বৈঠক ডেকেছেন স্পিকার। তবে তা সফল হবে কি না, তা কংগ্রেসের পরবর্তী পদক্ষেপের উপর নির্ভর করছে। 

স্পিকারের সতর্ক বার্তার পরও সোনিয়া গান্ধী দলের এমপিদের সঙ্গে এক বৈঠকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, ক্ষমতাসীন বিজেপির বিতর্কিত নেতাদের সরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত তাদের প্রতিবাদ চলবে।

২৫ এমপিকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “নরেন্দ্র মোদী সরকার লোকসভায় গণতন্ত্রের গুজরাট মডেল প্রতিস্থাপন করছে।

“গুজরাটে প্রায়ই বিরোধী দলের সদস্যদের বহিষ্কার করা হত। ওই একই কাণ্ড এখন এখানে হচ্ছে।”