আক্তার উদ্দীনের সামনেই তার সহযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করেন

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Jan 2017, 06:37 PM
Updated : 1 Jan 2017, 06:37 PM

মোঃ আক্তার উদ্দীন ১৯৭১ সালে ৩ নাম্বার সেক্টরে যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। সেপ্টেম্বর মাসের ১৭ তারিখ তিনি প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। রায়পুড়া হয়ে বিকালে কসবায় পৌছান আক্তার উদ্দীনসহ সাতজন। সেখানে এক রাজাকারের বাড়িতে তাদের আশ্রয় মিলেছিল। পরে সত্যটা জানার পর তারা তৎক্ষণাৎ সেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়েন এবং পাট ক্ষেতে সারা রাত লুকিয়ে ছিলেন।

এরপর আক্তার উদ্দীন ইয়োথ ক্যাম্প, গকুলনগর হয়ে হ্যাজামারা ক্যাম্পে পৌছান। এখান থেকে আসাম হয়ে পাকিস্তানের একটি ক্যাম্পে আক্রমণের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাকিস্তানি ক্যাম্পে হামলা করার জন্য ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা প্রস্তুতি গ্রহণ করে।  

সেই অপারেশনে আক্তার উদ্দীন এবং তার সহযোদ্ধা আনোয়ার একটা কলাগাছের নিচে পজিশন নিয়েছিল। কিন্তু সেখানেই ঘটে বিপত্তি। গ্রামের বেশকিছু মানুষ তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। তারা নিজের ঘরের টিনে শব্দ করে পাকবাহিনীকে সংকেত দিয়েছিল যে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করতে এসেছে। এমন অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডিং অফিসার সবাইকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, দুইজন করে পজিশন নিতে।

হঠাৎ পাকিস্তানি বাহিনী কিছু বুঝে উঠার আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের উপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার গুলিবিদ্ধ হন। আক্তার উদ্দীনের সামনে ছটফট করতে করতে তিনি মারা যান। আক্তার উদ্দীন নিজের মনকে শক্ত করেন। সিদ্ধান্ত নেন যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। এমন সময় সংকেত আসে সব মুক্তিযোদ্ধাদের পিছু হটতে হবে। তখন আক্তার উদ্দীন সহযোদ্ধার স্টেনগান নিয়ে পিছু হটেন।

নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আক্তার উদ্দীন বলেন, ‘সবাইকে মুক্তিযুদ্ধে প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। প্রকৃত ইতিহাস জানলেই সবাই দেশের জন্য কাজ করতে আরও প্রত্যয়ী হবে।’