রায়ের খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে

জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে উচ্চ আদালতের রায়ের সংবাদটি গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোতে।

ফয়সাল আতিকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2013, 05:19 PM
Updated : 2 August 2013, 02:48 AM

রয়টার্স, বিবিসি, সিএনএন, গার্ডিয়ান, ডন, টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে আগামী নির্বাচন থেকে দলটির বাদ পড়ার সম্ভাবনার বিষয়টিতেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষ হয়ে গণহত্যা চালানোর দায়ে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচারের বিষয়টিও প্রতিবেদনে স্থান পায়।

রয়টার্স

রয়টার্স শিরোনাম করেছে- ‘বাংলাদেশের আদালতে দেশটির প্রধান ইসলামী দলকে অবৈধ ঘোষণা’।

মূল প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় ইসলামপন্থী দল জামায়াতে ইসলামীকে অবৈধ ঘোষণা করেছে দেশটির আদালত। এই রায়ের পর রাজধানী ঢাকা এবং বগুড়া, যশোর, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সহিংস বিক্ষোভ করেছে দলের কর্মী-সমর্থকরা।

এছাড়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা এবং ১২ ও ১৩ অগাস্ট জামায়াতের হরতাল আহ্বানের বিষয়টিও স্থান পায় রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

বিবিসি

বাংলাদেশে একটি ইসলামী দলের ওপর উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা- এই শিরোনাম করেছে বিবিসি।

তারা বলেছে, দেশটির আগামী নির্বাচনে জামায়াতের অংশ নেয়ার যোগ্যতা হারিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের একজন আইনজীবীর বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, নির্বাচনে অংশ নিতে হলে দলটিকে এর গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে আবার নিবন্ধনের আবেদন করতে হবে।

রিট আবেদনে জামায়াত একটি ধর্মীয় দল হিসাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না বলে অভিযোগ করা হয়।

বিবিসি রায়ের বিষয়ে ইসির আইনজীবী ড. শাহদীন মালিকের মন্তব্যও প্রকাশ করে। এতে তিনি বলেন, দলটি যদি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক গঠনতন্ত্রের ধারা পরিবর্তন করে এবং পুনরায় নিবন্ধনের আবেদন করে তবে তারা আবারো নিবন্ধিত হতে পারে।

বিবিসি প্রতিবেদনের শেষ ভাগে সম্প্রতি বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একটি প্রতিবেদনও জুড়ে দেয়।

এতে বলা হয়, জামায়াত নেতাদের নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশে সহিংসতায় কমপক্ষে দেড়শ মানুষ নিহত হয়েছে, যার অধিকাংশই ছিল প্রতিবাদকারী।

ডন

জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের রায় নিয়ে বিস্তৃত প্রতিবেদন করে পাকিস্তানের বহুল প্রচারিত দৈনিক ডন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের আদালত জামায়াতকে বেআইনি ঘোষণা করেছে, নির্বাচনের অযোগ্য করেছে।

তবে এই রায়ের ফলে দেশের রাজনীতি আবারো সহিংসতায় রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয় ডনের প্রতিবেদনে।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের উদ্ধৃতি দিয়ে ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়,  শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের চাপে আদালত এই রায় দিয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া

ভারতের ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া আগামী নির্বাচনে জামায়াতের অংশগ্রহণের সুযোগ হারানোকে গুরুত্ব দিয়েছে।  

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মৌলবাদী দল জামায়াতে ইসলামীকে দেশটির আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। রায়ে দলটির নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া জামায়াতের বিভিন্ন নেতার মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত হওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

সিএনএন

‘বাংলাদেশের ইসলামী দলের বিরুদ্ধে আদালতের রায়’- শিরোনামে প্রতিবেদন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান গণমাধ্যম সিএনএন’র।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধান দুটি বিরোধী দলের একটি হচ্ছে জামায়াত। দলটি রাষ্ট্র ক্ষমতার লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে থাকে।

গার্ডিয়ান

যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান তাদের ঢাকা ও দিল্লি প্রতিবেদকের তথ্য নিয়ে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলে আদালতের রায় নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়, ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামী রাজনৈতিক দলের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে একটি আদালত।

গার্ডিয়ান বলেছে, জামায়াতে ইসলামীর ব্যাপকভিত্তিক  জনসমর্থন না থাকলেও দলটির সমর্থন বিভিন্ন আসনে অন্য দলের প্রার্থীদের জিতিয়ে দিতে ভূমিকা রাখে।

সরকার ও জামায়াতের মধ্যে সাম্প্রতিক দ্বন্দ্ব এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে দলটির শীর্ষ নেতাদের দণ্ডিত হওয়ার ঘটনায় সহিংসতা নিয়ে মানবাধিকার সংগঠন এইচআরডব্লিও’র প্রতিবেদনটি বড় করে প্রকাশ করে গার্ডিয়ান।