এরইমধ্যে রাজশাহী ও চট্টগ্রামে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবনির্মিত আউটডোর কমপ্লেক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা মানুষকে ভালোভাবে উন্নত সেবা দিতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
“ইতিমধ্যে আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে আরেকটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আরো দুটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করব। ইতিমধ্যে সে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
“আমি সেনাবাহিনীকে বলে দিয়েছি- যেখানে পাঁচশ বেডের হাসপাতাল আছে, সেখানে মেডিকেল কলেজ করতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে ২৩টি সরকারি মেডিকেল কলেজ আছে। আরো পাঁচটি মেডিকেল কলেজ চালুর প্রক্রিয়া চলছে।
গত ছয় বছরে ছয়টি ডেন্টাল কলেজ, পাঁচটি হেলথ টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, সাতটি নার্সিং কলেজ ও ১২টি নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
বিএসএমএমইউয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে এই অনুষ্ঠানে রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসকদের ভালো ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রোগী অর্ধেক ভালো হয়ে যায় ভালো ব্যবহার করলে। আপনাদের (চিকিৎসক) ব্যবহারের ওপর রোগীরা ভরসা পায়। সেদিক চিন্তা করেই চিকিৎসা দেবেন।”
এই কমপ্লেক্স উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রোগীরা আরো উন্নত চিকিৎসাসেবা পাবেন এবং চিকিৎসকরাও উন্নত পরিবেশে রোগীদের সেবা দিতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
চিকিৎসায় উৎকর্ষের প্রয়োজনে গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল তৎকালীন পিজি হাসপাতালকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটি স্বাধীন দেশে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে না- এটা কিভাবে হয়?”
সে সময় বিরোধী দলের সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।”
গবেষণার ওপর আরো গুরুত্ব দিতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নার্সিং শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “নার্সের যথেষ্ট ঘাটতি আছে। আরো নার্স নিয়োগ দিতে হবে।
“আগে নার্সিং ক্ষেত্রে কেউ ভর্তি হতে চাইত না। স্বাস্থ্য সেবায় নার্স প্রয়োজন। আমাদের এখানে রোগী ও চিকিৎসকের তুলনায় নার্সের সংখ্যা কম।”
১৯৭২ সালে দেশজুড়ে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ বঙ্গবন্ধু গ্রহণ করেছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় কমিউনিটি ক্লিনিক গড়ে তোলা হয় বলে শেখ হাসিনা জানান।
“শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়,” বলেন তিনি।
বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে এ পর্যন্ত আট হাজার ৮৫৭ জন সহকারী সার্জন এবং সহকারী ডেন্টাল সার্জন নিয়োগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অতীতে এতো নিয়োগ কেউ দেয়নি।”
ঢাকার কুর্মিটোলায় এবং খিলগাঁওয়ে পৃথক দুটি পাঁচশ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল চালুর কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রেলের একটি নিজস্ব হাসপাতাল রয়েছে। এটাকে শুধু রেলের জন্য না রেখে জেনারেল হাসপাতাল করে দিলে শাহজাহানপুরের লোকজন চিকিৎসা পাবে।”
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক ও বিএসএমএমইউর উপাচার্য প্রাণ গোপাল দত্ত্ বক্তব্য দেন।
আগামী বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন জাহিদ মালিক।