একই সময়ে সচিবালয়ের অন্য ভবনগুলোতেও চার দফা বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে বলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সচিবালয়) শামসুল আলম জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, সচিবালয়ের চার নম্বর ভবন বাদে অন্য ছয়টি ভবনে ঢাকার পূর্ব ও পশ্চিম গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। আর চার নম্বর ভবনে বিদ্যুৎ আসে পূর্ব গ্রিড থেকে।
“বুধবার পূর্ব গ্রিডে পাওয়ার ট্রিপ করায় চার নম্বর ভবনে সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়। এ সময় অন্য ভবনগুলোতে পশ্চিম গ্রিডের বিদ্যুৎ দিয়ে সরবরাহ চালিয়ে নেয়া হয়।”
“ভোল্টেজের তারতম্যের কারণেও চার নম্বর ভবনের বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এছাড়া বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী এই ভবনে অফিস করবেন। এজন্য এই ভবনের পুরো লাইন চেক করে ঠিক করা হয়েছে।”
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভূমি মন্ত্রণালয়ে আসার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
পূর্ব গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সময় সচিবালয়ের অন্য ভবনগুলোতেও চারবার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে বলে জানান শামসুল।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সময় জেনারেটরের সাহায্যে চার নম্বর ভবনের তিনটি লিফট সচল রাখা হয়।
এদিকে চার নম্বর ভবনে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় নয়টি ফ্লোরে থাকা সাতটি মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয় বলে কয়েকজন কর্মকর্তা জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অন্ধকারে বসে অনেকেই কোনো কাজ করতে পারেননি। অনেকে ভবন থেকে বের হয়ে অন্য ভবনে গিয়ে সময় কাটিয়েছেন।
গ্যাস সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় ঘাটতি মেটাতে গত মাসখানেক ধরেই দফায় দফায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগকে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) হিসাবে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ছয় হাজার মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে, যাতে ঘাটতি থাকছে পাঁচশ মেগাওয়াটের বেশি।
এর মধ্যে গ্রিড বা সরবরাহ লাইনে ত্রুটির কারণে লম্বা সময় বিদ্যুৎ বন্ধ থাকলে রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষকেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
গত ১৮ জুলাই দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৪১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। ওইদিন লোডশেডিংয়ের প্রয়োজন হয়নি বলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) পক্ষ থেকে বলা হয়।
এই হিসাবে দুই মাসের ব্যবধানে বিদ্যুতের উৎপাদন কমেছে প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উৎপাদিত গ্যাস কখনো বিদ্যুতে, কখনো সার কারখানায় দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা হচ্ছে। এখন সার কারখানাগুলো পুরোদমে চলছে। সেখানে গ্যাস দিতে গিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সরবরাহ কমেছে।”