সময়ের ব্যবধানে ভবনগুলো ধ্বংসের প্রহর গুনলেও আজও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে জানান দেয় বালিয়াটির জমিদারদের সেকালের সেই বিত্ত-বৈভবের কথা।
আঠারো শতকের প্রথম ভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথমভাগ। প্রায় দুইশ বছরের এই দীর্ঘ সময়ে বালিয়াটির জমিদারদের সুখ্যাতি ছিল। এসময়ে তারা নানারকম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তৈরি করেন এ এলাকায়। বালিয়াটি জমিদারবাড়ি সেগুলোর মধ্যে অন্যতম।
জানা যায় আঠারো শতকের মধ্যভাগে জনৈক লবণ ব্যবসায়ি জমিদার গোবিন্দরাম শাহ বালিয়াটি জমিদারবাড়ি নির্মাণ করেন। আর ক্রমান্বয়ে তার উত্তরাধিকারীরা এখানে নির্মাণ করেন আরও বেশ কিছু স্থাপনা।
পূর্ব দিকের একটি অংশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলেও বাকি চারটি টিকে আছে এখনও। মূল ভবনগুলোর সামনের দেয়ালজুড়ে নানারকম কারুকাজ আর মূর্তি এখনও রয়েছে।
বালিয়াটি জমিদারবাড়ির বিশাল কমপ্লেক্সটি উঁচু দেয়ালে চারদিকে ঘেরা। প্রাচীন আমলের সেই প্রাচীর এখনও টিকে আছে। চার দেয়ালের মাঝে এখন রয়েছে চারটি সুদৃশ্য ভবন। আর ভবনগুলোর সামনের প্রাচীর দেয়ালে রয়েছে চারটি প্রবেশ পথ। আর চারটি ভবনের পেছন দিকে আছে আরও চারটি ভবন। চারটি প্রবেশ পথের চূড়ায় রয়েছে পাথরের তৈরি চারটি সিংহমূর্তি।
সিংহ দরজা পেরিয়ে বাইরে বেরুলেই দীর্ঘ পুকুর। পুকুরের জলে বালিয়াটি প্রাসাদের প্রতিচ্ছবি আজও মন ভরিয়ে দেয়।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি মূলত পাঁচটি মহলে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে টিকে আছে প্রায় একই রকম চারটি। আর এই চারটি মহলের মাঝের দুটি দোতলা আর দুপাশের দুটি তিনতলা। প্রায় বিশ একরেরও বেশি জমির উপরে নির্মিত এ জমিদার বাড়িতে রয়েছে ছোট বড় দুইশরও বেশি কক্ষ। পেছনের দিকে আছে বড় একটি পুকুর।
কীভাবে যাবেন
রাজধানী থেকে দিনে দিনেই ঘুরে আসা যায় বালিয়াটি জমিদার বাড়ি থেকে। ঢাকার গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে সরাসরি সাটুরিয়া যায় ‘জনসেবা’ বাস। ভাড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
এছাড়া দেশের যেকোনো স্থান থেকে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের কালামপুর স্টেশনে পৌঁছে সেখান থেকেও লোকাল বাসে সাটুরিয়া যাওয়া যায়।
সাটুরিয়া স্টেশন থেকে বালিয়াটি জমিদারবাড়ির রিকশা ভাড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা। নিজস্ব গাড়ি নিয়ে সরাসরি জমিদার বাড়ির সামনেই যাওয়া যায়।