এক্স অফিসিনা নস্ত্রা

ঢাকার গুলশানের বেঙ্গল আর্ট গ্যালারিতে কথা হচ্ছিল একজন শিল্প সংগ্রাহকের সঙ্গে। কোনোভাবেই নাম প্রকাশ করতে চাইলেন না। অবশ্য দীর্ঘ সময় কাজ নিয়ে কথা বললেন।

শরীফ আহমেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2015, 10:21 AM
Updated : 4 July 2015, 10:24 AM

“কেমন যেন লাগছে। আমি কখরও ভাবিনি কোনো পেইন্টিং এক্সিবিশনে এসে এমন অনুভূতি হবে। অবশ্য অন্য দশটা থেকে এটা একেবারেই ভিন্ন। এমন কয়েকজনকে পেলাম যারা আমাদের মাঝে আছেন শুধু এই কাজগুলো দিয়ে, ভাবতেই কেমন লাগে। আমাদের সময়ে অবশ্য শিল্পীবন্ধুরা এত্তসব চিন্তাই করতে পারত না। তবে এটাও ঠিক কাজটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলে, মানুষের মাঝে এমনিতেও বেঁচে থাকা যায়। তবে যাই হোক ইন্টারেস্টিং, আমি আবার আসবো সময় করে।”

বাংলাদেশ, ভারত ও আমেরিকার ২৪জন শিল্পীর কাজ নিয়ে ‘এক্স অফিসিনা নস্ত্রা’ শিরোনামে এক প্রদর্শনী চলছে সেখানে।

দীর্ঘদিন ধরে দেশের শিল্প চর্চার খোঁজ-খবর রাখছেন, সে জায়গা থেকেই যেন একটু অধিকার রেখেই বললেন, “একটা সময় তো রোজায় কোনো প্রদর্শনীও হত না ঢাকায়। আর এখন মানুষ একসঙ্গে এত্তগুলো শিল্পীর কাজ দেখবে, উদ্যোগটা তো নিঃসন্দেহে ভালো। আর মানুষজন তো এই সময় প্রচুর কেনাকাটা করে, সেদিক থেকে চিন্তা করলে কিন্তু এক ধরনের শিল্পের স্বাদও গড়ে উঠবে কাজগুলো দেখলে।” 

যেই প্রদর্শনী নিয়ে এত কথা, কী আছে সেই আয়োজনে? মূলত মহীরুহ শিল্পী সফিউদ্দীন আহমেদের নামে বেঙ্গল ফাউন্ডশেনের ছাপচিত্র কারখানা ‘সফিউদ্দীন বেঙ্গল প্রিন্ট মেকিং স্টুডিও’তে করা শিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়েই এই প্রদর্শনী সাজানো হয়েছে।

যাদের মাঝে রয়েছেন- আলমগীর হক, আমিতাভ সেন গুপ্ত, অসিত মিত্র, বীরেন সোম, বনি আদম, ধীরাজ চৌধুরী, হাশেম খান, হাসানুর রহমান রিয়াজ, যোগেন চৌধুরী, জয়া শাহরিয়ার হক, জুটন চন্দ্র হক, কারেন কুঙ্ক, মাহবুবুর রহমান, মাহমুদুল হক, মুর্তজা বশীর, কাইয়ুম চৌধুরী, রনজিৎ দাস, রোকেয়া সুলতানা, রুজভেল্ট বেঞ্জামিন ডি রোজারিও, সমরজিৎ রায় চৌধুরী শিমুল সাহা, সুখময় এম, সুনীল দাস ও তায়েবা বেগম লিপি।

২০১২ সাল থেকে আধুনিক ও সময়োপযোগী মাধ্যমে ছাপচিত্র চর্চার জন্য এই স্টুডিও শিল্পীরা ব্যবহার করে আসছেন। সেই প্রক্রিয়াতেই এই প্রদর্শনীর মূল ভাবনা। সবগুলো কাজই সম্প্রতি মুদ্রণ করা।    

‘এক্স অফিসিনা নস্ত্রা’ হল লাতিন আশ্রিত একটি বাক্যাংশ যার অর্থ দাঁড়ায় ‘আমাদের কর্মশালা থেকে’। সাধারণত কোনো এলাকার কাজ এবং সেই কাজের ধরণ বুঝতে কিছুদিন আগেও এই ধরনের চর্চার বেশ একটা চলছিল। সে যাই হোক, নিঃসন্দেহে একটি উপভোগ্য প্রদর্শনী এটি।

এমন সব শিল্পীদের কাজ রয়েছে এখানে, যা হয়ত অন্যথা হলে দেখার সুযোগই মিলবে না। তাছাড়া রং ও ফর্মের ব্যবহারের ভিন্নতার কারণে একই ছাদের তলায় ভিন্ন ধরনের শিল্পরীতিরও দেখা মিলবে এই প্রদর্শনীতে। সময়ের সঙ্গে কীভাবে চর্চায় পার্থক্য তৈরি হয়েছে আমাদেরই খুব পরিচিত কারও, তাও দেখবার সুযোগ পাওয়া যাবে।

সব মিলিয়ে এই ভিন্ন ধরনের দলীয় চিত্র প্রদর্দনী অনেককেই অনুপ্রানিত করবে। সঙ্গে দেখা যাবে আকর্ষণীয় সব ছাপাই ছবি।

১৪ জুন শুরু হওয়া এই আয়োজন চলবে ১১ জুলাই পর্যন্ত। তবে রোজার জন্য বেঙ্গলের নিয়মিত প্রদর্শনীর সময়ে একটু পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে এই আয়োজন।

বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জের ঠিকানাঃ ৬০ গুলশান এভিনিউ, গুলশান ১, ঢাকা ১২১২।

ছবি: ফায়হাম ইবনে শরীফ।