তবে এটা গবেষণাগারে করা কোনো গবেষণা নয়। বিভিন্ন মানুষ পর্যবেক্ষণ এবং অন্যান্য গবেষণার ফলাফল পর্যালোচনা করে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছিয়েছেন।
হার্ট জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা যায়, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে চকলেট খাওয়া কমানোর কোনো প্রভাব নেই।
গবেষকরা বলেন, “ক্রমবর্ধমাণ লক্ষণগুলো ইঙ্গিত করে যে, বেশি পরিমাণে চকলেট খাওয়ার সঙ্গে ভবিষ্যতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমার সম্পর্ক আছে।”
গবেষকরা দেখিয়েছেন যে, মিল্ক চকলেটও হৃৎপিণ্ডের জন্য ডার্ক চকলেটের মতোই উপকারী।
স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাবারডিনের চুন শিং কয়োক ও তার সহকর্মীরা এই গবেষণার জন্য প্রায় ১২ বছর ধরে ২১ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করেছেন। প্রতিদিন শূণ্য থেকে ১০০ গ্রামের মধ্যে যাদের দৈনিক চকলেট গ্রহণের গড় পরিমাণ ছিল প্রায় ৭ গ্রাম।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, যারা একবারেই চকলেট খান না তাদের তুলনায় যারা বেশি চকলেট খান তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমেছে ১১ শতাংশ এবং হৃদরোগের কারণে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কমেছে ২৫ শতাংশ।
এছাড়াও খাদ্যাভ্যাসের বিভিন্ন দিক পর্যলোচনা করার পরও, করোনারি হার্ট ডিজিজ বা হৃদপিণ্ডে রক্তসঞ্চালন জনিত সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এবং একই কারণে মৃত্যুর হার শতকরা ৯ ভাগ কমার সম্পর্ক আছে চকলেট খাওয়ার সঙ্গে।
অন্যান্য ঝুঁকির কথা বিবেচনায় রেখেও দেখা গেছে, একইভাবে সর্বোচ্চ পরিমাণ চকলেট খাওয়ার সঙ্গে স্ট্রোক করার সম্ভাবনা শতকরা ২৩ ভাগ কমে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে।
চকলেট ও হৃদরোগের মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ক প্রায় ১ লাখ ৫৮ হাজার মানুষকে নিয়ে করা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রকাশিত প্রমাণাদিগুলোর একটি নিয়মানুগ পর্যালোচনাও তৈরি করেছেন গবেষকরা।
এই নিয়মানুগ পর্যালোচনার অন্তর্ভুক্ত ৯টি গবেষণায় মধ্যে ৫টি গবেষণাতেই করোনারি হার্ট ডিজিজ এবং স্ট্রোক নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে এবং নিয়মিত চকলেট গ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে উভয়েরই ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম পাওয়া গেছে।
নিয়মিত চকলেট গ্রহণকারীদের যেকোনো ধরনের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রায় ২৫ শতাংশ আর মৃত্যুর সম্ভাবনা প্রায় ৪৫ শতাংশ কম।
গবেষকরা বলেন, “এটি একটি পর্যবেক্ষণভিত্তিক গবেষণা, তাই এর ফলাফলের কোনো নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই।”
ছবি: রয়টার্স।