পিৎজা গাই

ছোটখাট ইতালীয় ঘরানার রেস্তোরাঁ।

মিথুন বিশ্বাসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2015, 11:34 AM
Updated : 28 May 2015, 11:57 AM

নাভিদ রুবাইয়াৎ হাসান বয়সে তরুণ হলেও বাস করেছেন বেশ কয়েকটি দেশে, তার মধ্যে একটি হল ইতালি। তার বাবা জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থায় কাজ করতে গিয়ে থিতু হয়েছেন এই পিৎজার দেশে!

হাসানও তাই সুযোগ পেয়ে কাজ করেছেন ইতালির কয়েকটি পিৎজেরিয়াতে, কথার ফাঁকে জানা গেল।

২০১২ সালে দেশে ফিরে এসে হাসান ও তার সহধর্মীনি ফারজিনা আমিন মিলে বসুন্ধরায় নিজেদের বাসা থেকেই পিৎজা বানিয়ে ডেলিভারি দেওয়া শুরু করেন।

এরপর তারা চলে আসেন বর্তমান ঠিকানায়, বাড়ি ১০৭, রোড ৪, ব্লক বি, বনানী।  

এই পিৎজেরিয়ার নাম দিয়েছেন ‘পিৎজা গাই’। দোতলায় অবস্থান হলেও নিচতলা থেকেই চোখে পড়বে রোমের কলোসিয়াম! আর ভেতরে ঢুকলে হয়ত কানে বাজবে পাভারোত্তির কোনো সংগীত। আছে ভেনেৎজিয়ার(ভেনিস)কার্নিভালের রহস্যময় মুখোশও। চেয়ার টেবিলের আশপাশে বা দেয়ালে চোখে পড়বে অনেক কিছুই, যেমন মোদেনা শহরের ব্যালসেমিক ভিনেগার বা ইতালীয়দের বিপণনকরা কফির প্যাকেট। মনে হবে যেন আছেন লিটল ইতালিতে! আক্ষরিক অর্থেই ছোটখাট এই রেস্তোরাঁ। সাকুল্যে বিশজন বসতে পারবেন এখানে।

কালজনে

পিৎজা মার্গেরিতা।

কী এমন বিশেষত্ব এদের? হাসানের বাবার কর্মসূত্রে ও মায়ের সখের কারণে বাগান করাটা আয়ত্বে এনেছেন। ইতালি থেকে নিয়ে আসা বিভিন্ন প্রজাতির হার্বস ‘কালচার’ করেছেন নিজের বাড়ির ছাদে। আর অনেকেই হয়তো জানবেন যে ইতালির আবহাওয়াগত কারণে সবজি ও হার্বের গুণগত মান থাকে বেজায় উঁচু।আর খাবারে স্বাদ ও গন্ধ আনবার জন্য এই গুল্মর ব্যবহার যথেচ্চই থাকে ইউরোপীয় ঘরাণার খাবারে, ইতালিও ব্যতিক্রম নয়।

হাসান এটাও জানালেন, ইতালির মতো আবহাওয়া তো আর চাইলেই বাংলাদেশে পাওয়া যাবে না। তাই হার্ব’য়ের স্বাদ বা গন্ধ একেবারে সমান না হলেও হয় বেশ কাছাকাছিই।

হাসান ও তার সহধর্মীনি জানান তারা একটি বেসরকারি টেলিভিশনে রান্নার একটি অনুষ্ঠানে সম্প্রতি অংশ নিয়েছেন। তবে এরও আগে যেটি করেছেন সেটা বেশ কৌতুহলউদ্দীপক।

পিৎজা গাই শুরুর আগে দুজন মিলে ইতালির নাপোলি ও তার কাছের কিছু ছোট শহরের বেশ কিছু ছোট পিৎজেরিয়াতে পিৎজা বানানো দেখেছেন, জেনেছেন তাদের বিশেষ কিচু কৌশল। আর ওই ‘বুড়ো’ পিৎজার শেফরা কিন্তু পিৎজা শিল্পের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ব্যাপারে বেজায় কড়া! তারপরও নাকি ওই শেফরা বেশ আগ্রহ ভরেই দেখিয়েছেন তাদের প্রাণের কাছের কাজটি!

তাই হাসান ও আমিনের দাবি এখানে পাওয়া যাবে পিৎজার ‘আসল’ স্বাদ।

পিৎজা।

পিৎজাই কিন্তু ইতালির রান্নার শেষ কথা নয়, যদিও এই খাবারের বিশ্বজোড়া জনপ্রিয়তা বেশ ঈর্শনীয় এটা বলাই যায়। এখানে সফিচিনির দাম ৯৯ টাকা, দেখলে বড় আকারের কুলিপিঠা বলে ভ্রম হতে পারে! তবে এর স্বাদে কোনো ভ্রম নেই! একবারে খাসা! কামড় দিলে মোৎজারেল্লা চিজ মুখ থেকে লম্বাবস্থায় ঝুললে দায় আপনার নিতে হবে না! এই বাজারে ১০০ টাকার নিচে এরকম খাবার কয় জায়গাতেই বা পাওয়া যায়!

কালজনে রোসো ২২০ টাকা পড়বে, এটি হল ছোট সাইজের পিৎজা যা ভাঁজ করে বেইক করা হয়। কামড় দিলে গরম ধোঁয়ার সঙ্গে চিজসহ অন্য উপকরণের গন্ধ নাককে বেশ খানিকক্ষণ ব্যস্ত রাখবে!

পিৎজার বেলায় খাঁটি ইতালীয় ঘরানার পাশাপাশি আছে কিছু ফিউশনও। আর তাই মেনুতে মার্গেরিতাও (১২ ইঞ্চি ৫৫০ টাকা) যেমন মিলবে তেমনি মিলবে আমাদের জিভের কাছের চিকেন টিক্কা স্পেশালও (১২ ইঞ্চি ৭০০ টাকা)।

পাস্তা বিক্রিও শুরু করেছেন এরা। এছাড়াও মিলবে কফি।

ওয়াইফাই আছে। ফোন করে হোম ডেলিভারি পাওয়া যাবে বনানী, বনানী ডিওএইচএস, বারিধারা, বারিধারা ডিওএইচএস ও গুলশান এলাকায়।

নাভিদ জানান, এখানে মোবাইল ফোন দিয়ে কেউ অর্ডার দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনফার্মেশন চলে যাবে। আবার খাবার ডেলিভারি দেওয়ার মুহূর্তেও যাবে আরও একটি এসএমএস।