“আমি যেখানেই গিয়েছি, সেখানেই নিজের একটা ঘর তৈরি করতে চেয়েছি। কারণ আমি একজন পরিব্রাজকের মত ঘুরে বেড়িয়েছি। দেশ, মহাদেশের মানচিত্র পেরিয়ে আমি ঘুরে বেড়িয়েছি বুড়িগঙ্গা থেকে নীল নদ পর্যন্ত। আর সেজন্যই প্রদর্শনীতেও গ্যালারির মাঝেই কিছুটা জায়গা ঘরের আদলে সাজিয়েছি আমি।“
১৫ই মে ঢাকার বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জে শুরু হওয়া একক প্রদর্শনী নিয়ে কথা বলছিলেন চিত্রশিল্পী ভিনীতা করীম।
প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘রিভার স্টোরিজ’। নদীকে উপজীব্য করে শিল্পীর সাম্প্রতিক সময়ে করা ৩৭টি কাজ নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনী। এর মাঝে ৩৩টি ক্যানভাসে করা চিত্রকর্ম, আর বাকি ৪টি কোনো বস্তুর উপর করা চিত্রকর্ম। বাংলাদেশে এটি ভিনীতা করিমের চতুর্থ আর বিশ্বব্যাপী তেইশতম একক প্রদর্শনী।
তার কাজের ধরনের মধ্যে কোলাজকেও বেশ প্রাধাণ্য দিতে দেখা যায়। আর সেক্ষেত্রে মসলিন, পাটের সুতা, খবরের কাগজ, গোল্ড লিফসহ আরও বিভিন্ন উপাদান খুবই সহজাতভাবে ব্যবহার করেছেন। এদিক থেকে সেলাইয়ের কথা উল্লেখ না করলেই নয়। প্রতিটি ক্যানভাসই এমন যৌগিক প্রক্রিয়ায় বেড়ে উঠেছে যে, খুব সূক্ষ্ম ও নিপুন সেলাই ছাড়া সেগুলোর শিল্পমান ধরে রাখা সম্ভব ছিল না।
“তার রংয়ের ব্যবহার সত্যিই বিশেষ কিছু। এরকম কড়া রংয়ের ব্যবহার আর ক্যানভাসে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারা সহজ কথা নয়। তাছাড়া সবগুলো কাজ মিলিয়ে যে প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে এক ধরনের ‘পুনরাবৃত্তির’ (রিপিটেশন) মতো ব্যাপার আছে, যেটা আমার খুব ভালো লেগেছে। তবে পেইন্টেড অবজেক্টগুলো (ক্যানভাস বা কাগজ ছাড়া তৃতীয় কোনো কিছুর উপর করা চিত্রকর্ম) খুব একটা সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়নি।”
প্রদর্শনী ঘুরে নিজের অভিব্যক্তির কথা জানালেন তাজিন আহমেদ।
সব মিলিয়ে ভিনীতা করীমের এই প্রদর্শনী ব্যক্তিগত জীবনবোধ থেকে গড়ে উঠা শিল্পকর্মের আয়োজন। নদী ও নারী, শহর ও সভ্যতা এমনি সব শাশ্বত সম্পর্কের মাঝে গাঢ় রংয়ের ছোঁয়ায় বর্ণিল স্বপ্নালোক এই ‘নদীর গল্পসমূহ’।
১৬ই মে শুরু হওয়া এই আয়োজন চলবে ৬ই জুন পর্যন্ত। আর প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জের ঠিকানা: ৮০, গুলশান এভিনিউ, রোড ১৩১, গুলশান ১২১২, ঢাকা।
ছবি: ফায়হাম ইবনে শরীফ।