মোস্কা নাজিব আফগান তবে দেশ-মানচিত্রের সীমানায় তিনি একজন ভারতীয়। সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। পাশাপাশি আলোকচিত্রী হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন। মাতৃভূমি থেকে দূরে থাকায় শেকড়ের টান অনুভব করেন।
অন্যদিকে কলকাতার সাংবাদিক নাজেস আফরোজ পেশাগত কাজে দেশের বাইরে কাটিয়েছেন বেশ খানিকটা সময়। তবে এই দুজন একবিন্দুতে মিলেছেন অন্যখানে।
‘ফ্রম কাবুল টু কলকাতা: অফ বিলঙ্গিং, মেমোরিজ অ্যান্ড আইডেন্টিটি’ শিরোনামে এই দুই আলোকচিত্রী ও সাংবাদিকের ‘ডকুমেন্টারি ফটোগ্রাফি’ প্রদর্শনী এখন চলছে ঢাকার দৃক গ্যালারিতে।
মূলত শুকনা ফলমূল বিক্রি করতে কলকাতা ও আশপাশে বাংলাদেশের কিছুটা অংশসহ, মধ্য ও উত্তর ভারতের বেশ কিছু এলাকায় আফগানিস্তান থেকে আসত কাবুলিওয়ালারা। উনিশ শতকের প্রথম কিংবা ভিন্ন মতে এরও আগে থেকে চল শুরু হলেও ১৮৯২ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্প এই আফগান বণিক গোষ্ঠীকে ভারতীয় সমাজে নতুন চরিত্র এনে দেয়। এরপর বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে এই গল্প।
পাঁচ বছরের মিলি আর রহমত কাবুলিওয়ালার গল্পের মতো আজ হয়ত কাবুলিওয়ালাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে সেই বদলে যাওয়া জীবনেরই খোঁজ করেছেন মোস্কা নাজিব ও নাজেস আফরোজ। একটা অংশের জন্ম যেমন আফগানিস্তান, ঠিক তেমনি ভারতে জন্ম নেওয়া প্রজন্মও এরই মাঝে বেড়ে উঠেছে। কাবুলিওয়ালাদের জীবনযাপনের ছবি তুলতে যাওয়া তাই মোস্কার কাছে অনেকটা আত্মপরিচয় খুঁজতে যাওয়ার মতোই।
কাবুল থেকে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী কাবুল, দিল্লি ঘুরে এখন ঢাকায়। ঢাকা অধ্যায় শেষে এই আয়োজন ফিরে যাবে কলকাতায়, যেখানে কাবুলিওয়ালাদের আত্মপরিচয় খুঁজে বের করবার চেষ্ঠা করেছেন আলোকচিত্রী মোসকা নাজিব ও নাজেস আফরোজ।
২৪শে এপ্রিল শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী চলবে ৬ই মে পর্যন্ত। আর কাবুলিওয়ালাদের খোঁজে প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টার মাঝে দৃক গ্যালারিতে ঘুরে আসতে পারেন যে কেউ। আর ৬ই মে আলোকচিত্রী নাজেস আদফরোজকে নিইয়ে ‘আর্টিস্ট টক’য়ের আয়োজন করেছে আলোকচিত্রের স্কুল ‘পাঠশালা’।
দৃক গ্যালারির ঠিকানা: বাসা ৫৮, রোড ১৫ এ (নতুন), ধানমণিডি, ঢাকা ১২০৯।
ছবি: ফায়হাম ইবনে শরীফ।