রূপচর্চায় পুষ্প

বিভিন্ন ফুলে রয়েছে নানান রকম প্রকৃতিক উপাদান। যা বলিরেখা দূর করার পাশাপাশি নানাভাবে উপকার করে।

মরিয়ম মনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2015, 10:07 AM
Updated : 3 May 2015, 10:07 AM

“ফুলে থাকা নিউট্রিয়েন্ট চামড়ার এইজিং প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। তাই ত্বক বুঝে ফুল দিয়ে ফেইশল করলে উপকার পাওয়া যায়।” বললেন আকাঙ্ক্ষা’স গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের কর্ণধার জুলিয়া আজাদ।

তিনি আরও জানান, “ফুলে যাদের এলার্জি আছে বা সেনসিটিভ ত্বক তারা নিচের এই প্যাকগুলো ব্যবহার করবেন না। যাদের ত্বকে টানটান ভাব কম তাদের জন্য এই ফেইশল অনেক বেশি কার্যকর।”

গাঁদা ফুলের ফেইশল

ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা হারিয়ে গেলে এই ফেইশল করতে হয়। তাই ত্রিশোর্ধ হলে নিচে দেওয়া ‘ফ্লাওয়ার ফেইশল’টি করতে পারেন। সাধারণত এরকম বয়সেই ত্বক টানটান ভাব হারাতে থাকে।

এই কাজের দরকার হবে গাঁদা। এই ফুল ত্বকের রং হালকা করে সেই সঙ্গে পরিষ্কারও করে।

আগে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর কয়েকটি ফুলের পাপড়ির সঙ্গে গুঁড়াদুধ, টক দই, মধু ও গাজরকুচি একসঙ্গে পেস্ট করুন। এবার অল্প দুধের সরের সঙ্গে ছোট টেবিল-চামচ চন্দনবাটা, চার ফোটা গোলাপ জল, দুই ফোটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে ভালো করে মুখ ম্যাসেজ করুন। উষ্ণ গরম পানি দিয়ে এই প্রলেপ মুছে আবার একই মিশ্রণ দিয়ে ম্যাসেজ করুন।

এতে ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার হবে। আবার এই ফুল মরা চামড়া খুব সহজেই সরিয়ে নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। ফলে স্ক্রাবিংয়ের কাজটাও হয়ে যায়।

গোলাপের পাপড়ির মাস্ক

উজ্জ্বল ত্বকের জন্য গোলাপ ফুলের পাপড়ি নিয়ে ভালোকরে তা শুকিয়ে গুঁড়া বা পাউডার তৈরি করুন। দুধ আর গম (অল্প গুঁড়া করা) একসঙ্গে মিশেয়ে মুখে লাগান।

জুঁই ফুলের মাস্ক

একমুঠো জুঁই ফুল পানিতে ফুটিয়ে নিন, পানি ছেঁকে একটা পাত্রে রাখুন। আর জুঁই ফুলগুলো আলাদা বেটে টক দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। পরে জুঁই ফুল ফুটানো পানি আরও ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। সেনসেটিভ বা সংবেদনশীল ত্বকের জন্যে এই ফেইস প্যাক খুবই ভালো।

রং ফর্সা করতে পদ্ম

এই ফুলের বিভিন্ন মিনারেল রং ফর্সা করতে সাহায্য করে। ফুলের পাপড়িগুলো খুব ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর পানিতে চার মিনিট সিদ্ধ করে পেস্ট করুন। সঙ্গে দিতে পারেন টক দই আর মধু। চাইলে পদ্ম ফুলের পাপড়ি পানিতে ফুটিয়ে যে কোনো ফেইস প্যাকের সঙ্গে এটা মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করা যেতে পারে।

তবে এটা সেনসিটিভ বা সংবেদনশীল ত্বকে জন্য উপযুক্ত নয়।

এছাড়া কিছু পরিচিত ফুল আছে যা দিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করা যায়

গোলাপ ফুল:
কয়েকটি গোলাপ ফুলের পাপড়ি নিন। এর সঙ্গে দুতিন চা-চামচ ওটস আর দুধ মিশিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। তুলার বলে গোলাপ জল ভিজিয়ে পুরো মুখ মুছে তারপর শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর গোলাপের ফেইস প্যাকটি লাগান। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল হয়। শুষ্ক ত্বকের যেকোনো বয়সিরা গোলাপের এই প্যাক লাগাতে পারেন।

গাঁদা ফুল: যদি কারও মুখে পিম্পল বা ব্রণ থাকে তবে গাঁদা ফুলের অ্যান্টিসেপ্টিক এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান তা সারিয়ে তোলে। কয়েকটি ফুলের পাপড়ির সঙ্গে গুঁড়া দুধ, টক দই, মধু ও  গাজরকুচি একসঙ্গে পেস্ট করুন। এই প্যাক ত্বকের মলিনভাবও দূর করে। ব্রণে আক্রান্তরা সপ্তাহে দুদিন এই প্যাক ব্যবহার করুন।

বেলি ফুল: যাদের শুষ্ক ত্বক তারা এই প্যাক মুখে সপ্তাহে দুবার ব্যবহার করলে উপকার পাবেন। দেখবেন শুষ্কভাব অনেকটাই কেটে

গেছে। ফুলের বোঁটা থেকে পাপড়িগুলো আলাদা করুন। তারপর ফুটন্ত পানিতে ছেড়ে তিন থেকে পাঁচ মিনিট রাখুন। পানি ছেঁকে দুধের মালাইয়ের সঙ্গে পেস্ট করে নিন। মসৃণ ত্বক পাওয়ার জন্য প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। যাদের সেনসিটিভ বা সংবদেনশীল ত্বক তারা টক দইয়ের সঙ্গে ব্লেন্ড করে মুখে লাগান। সপ্তাহে একবার করাই যথেষ্ট।

জবা ফুল: কিছু জবা ফুলের পাপড়ি দিয়ে পেস্ট করে নিন। এর সঙ্গে চালের গুঁড়া, এসেন্সিয়াল অয়েল যেমন ভিটামিন ই আর অল্প পানি দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। মুখ থেকে ময়লা, দুষণ আর তেল থেকে মুক্তি পেতে এই প্যাক ব্যবহার করুন।

অন্যান্য ফুলের ছবি: রয়টার্স।