এই রাস্তায় এতো-এতো রেস্তোরাঁ থাকা সত্ত্বেও নতুন রসুইখানা প্রায়ই যোগ হচ্ছে। ধরনও পাল্টাচ্ছে রেস্তোরাঁগুলোর। একসময় ঢাকায় দেখা যেত চীনা বা দেশি/ভারতীয় খাবারের রেস্তোরাঁর আধিক্য।
এখন যেন সময়ের হাওয়া বদলেছে। অথবা পরিবর্তনশীল আর্থ-সামাজিক কাঠামোর চাঞ্চল্যের ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে ক্রমবর্ধমান রেস্তোরাঁ বাণিজ্যে। (অন্তত ঢাকা শহরে)
এই বনানী ১১ নম্বর রাস্তার ১০০ নস্বর বাড়ির তিনতলায় রেস্তোরাঁর নাম ফায়ার হাউজ। মূলত স্টেক পরিবেশন করা হয় অতিথিদের জন্য।
কয়েক বছর আগেও এই স্টেক বাংলাদেশে পাঁচ তারকা হোটেলের বাইরে খুব একটা বেশি পাওয়া যেত না। কারণ, স্টেকের মাংসের ‘কাট’ (গরুর বিশেষ অংশের মাংসকে বিশেষ আঙ্গিকে কাটা হয়) বাজারে বেশি একটা পাওয়া যেতনা। আর এই স্টেকের কাটের মাংস সংরক্ষণেরও আছে কিছু বিশেষ পদ্ধতি।
এখন ঢাকা শহরে আছে বেশ কয়েকটি স্টেকের রেস্তোরাঁ। ফায়ার হাউজ অন্যতম সংযোজন এতে, এটা বলা যায়।
রেস্তোরাঁর অন্যতম কর্ণধার তানজিম শাহজাহান জানান, চার স্কুলবন্ধুর সমন্বিত উদ্যোগ এটি। তিনিসহ আরেক বন্ধু বহুবছর কাটিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে, একজন অস্ট্রেলিয়ায় আর অন্যজন খাবার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন মালয়েশিয়ায়।
স্টেকের রেস্তোরাঁ খোলার কারণ হিসাবে শাহজাহান বলেন, পশ্চিমা ঘরানার খাবার হবার কারণে এদেশে ‘ভালো স্টেক’ পাওয়া যায়না। আর তাই ‘মানসম্পন্ন’ স্টেক অতিথিদের প্লেটে দেওয়াই নাকি তাদের মিশন!
শেফ গোমেজ শুধু স্টেকই তৈরি করেন না, স্টেকের সঙ্গে ব্যবহৃত বিভিন্ন সস যেমন টেনেসি বারবিকিউ, পেপার, মাশরুম ইত্যাদিও নিজের হাতেই বানান। আর শাহজাহানের জোর দাবি, শেফ গোমেজ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ‘সর্দার’, প্রতিবেদক দেখতে চাইলেই মিলল রসুইঘরে ঢোকার সুযোগ। বেশ পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি ভেতরের পরিবেশ। এটা মোটেও বাড়িয়ে বলা না।
মিক্সড গার্ডেন সালাদ স্বাস্থ্যসচেতনদের জন্য ভালো একটা পছন্দ।
চিকেন কিয়েভের নাম শুনলে রাজনৈতিকভাবে টালমাটাল অবস্থার দোলাচালে চলতে থাকা ইউক্রেইনের নাম চলে আসবে অবধারিতভাবে। যদিও এই খাবারটি রাশিয়ান না ইউক্রেইনিয়ান তা নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন আলোচনা। তবে চিকেনের এই কাটলেট কাটলে ভেতর থেকে বাটার যেভাবে গলে বেরিয়ে আসে তাতে মনে হতে পারে ‘আহ! মর্তে বসেই তো স্বর্গসুখ!’ নিতান্তই বেরসিক হলে জিভের জল ঠেকবে!! দুই টুকরা কাটলেটের দাম পড়বে ৮শ’ টাকা। সাইডে থাকছে ম্যাশ পটেটো ও ভেজিটেবল। এই সবজি সিদ্ধ করে গোল মরিচসহ কয়েকটি হাল্কা গন্ধের মসলাযোগে দেওয়া হয়।
তবে আরও বেছে নেওয়া যাবে সারলয়েন, টি-বোন, রিব আইসহ বেশ কিছু স্টেক।
ওয়াইফাই নেই এখানে।
ছবি: হাসান বিপুল