মহেড়া জমিদারবাড়ি

টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরে অবস্থিত প্রাচীন জমিদারবাড়ি মহেড়া। এতো সুন্দর ও সযত্নে সংরক্ষিত জমিদারবাড়ি এদেশে দ্বিতীয়টি নেই বললেই চলে। 

মুস্তাফিজ মামুনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2015, 08:40 AM
Updated : 17 April 2015, 07:00 PM

জেলার মির্জাপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চার কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এ মহেড়া জমিদারবাড়ি। ১৯৭২ সাল থেকে এ সুরম্য এ বাড়িতে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার থাকায় পুরো জমিদারবাড়ি খুবই ভালো অবস্থায় সংরক্ষিত আছে। ঢাকা থেকে দিনে দিনেই ঘুরে আসা যায় এ জমিদারবাড়ি থেকে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ছেড়ে সর্পিল আঁকাবাঁকা পথ পেড়িয়ে চোখ আটকে যাবে বেশ কিছু ঝকঝকে প্রাচীন স্থাপনা থেকে। শুরুতেই বিশাল একটি দিঘি। নাম তার বিশাখা সাগর। এর ভেতরে পাশাপাশি তিনটি সুরম্য প্রাসাদ। ভেতরে আছে আরও কয়েকটি ভবন, মন্দির ইত্যাদি।

সবুজ আঙিনার সামনে সমান সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি প্রাসাদই মহেড়া জমিদারবাড়ির প্রধান আকর্ষণ।

সর্ব ডানের প্রাসাদটির নাম চৌধুরী লজ, মাঝেরটি আনন্দ লজ এবং সর্ব বাঁয়ে মহারাজা লজ। প্রতিটি প্রাসাদের প্রবেশপথে আছে সিংহ দরজা। ভবনগুলোর পেছনে রানীপুকুর ও পাসরাপুকুর নামে দুটি পুকুর আছে। ধারনা করা হয় বাড়ির নারী সদস্যরা এই পুকুরগুলো ব্যবহার করতেন। একটু পেছনের দিকে কালীচরণ লজ নামে আরও একটি সুরম্য প্রাসাদ আছে মহেড়া জমিদারবাড়িতে। তবে এটি সামনের তিনটি প্রাসাদ অপেক্ষা ছোট। কালীচরণ লজের পাশেই আছে নিপুণ স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত মহেড়া জমিদারবাড়ির মন্দির।

প্রায় ১ হাজার ১৭৪ শতাংশ জায়গা জুড়ে মহেড়া জমিদারদের নানান কীর্তি বিদ্যমান। জানা যায় কালীচরণ সাহা ও আনন্দ সাহা নামে দুজন কলকাতা থেকে টাঙ্গাইলের মহেড়ায় এসেছিলেন। লবণ ও ডালের ব্যবসা করে তারা প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছিলেন সেসময়ে। মহেড়া এসে বসবাসের জন্য তারা তৈরি করেন সুরম্য এসব অট্টালিকা। জমিদারি প্রথা চালু হওয়ার পর কালীচরণ সাহা ও আনন্দ সাহার ছেলেরা চব্বিশ পরগনার জমিদাররদের নিকট থেকে করটিয়ার একটি অংশের জমিদারি কিনে নেন।  ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর মহেড়ার অনেক জমিদারই ভারতে চলে যান। ১৯৭২ সাল থেকে এই বাড়ি বাংলাদেশ পুলিশের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

কীভাবে যাবেন

ঢাকার মহাখালী বাস স্টেশন থেকে নিরালা, ধলেশ্বরী, ঝটিকা ইত্যাদি বাস যায় টাঙ্গাইল। ভাড়া ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। এসব বাসে চড়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জামুর্কি বাস স্টেশনের কিছুটা সামনে নামতে হবে। মহাসড়কের পাশেই মহেড়া জমিদারবাড়ির সাইনবোর্ড আছে। সড়কের শুরুতেই মহেড়া যাওয়ার দিক নির্দেশনা দেওয়া আছে।

প্রয়োজনীয় তথ্য

এ জমিদারবাড়িতে প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। পুরো বাড়িতে পুলিশ ট্রেনিং একাডেমির কার্যক্রম চলে, তাই অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হয়। এখানকার দায়িত্বে নিয়োজিত লোকজন পর্যটকদের জন্য বেশ সাহায্য পরায়ণ।