মহাখালী ওয়াইয়ারলেস মোড় থেকে গুলশান একয়ের দিকে যেতে বাঁদিকে পড়বে এই রেস্তোরাঁ। টামি টাইমের প্রধান ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে দেয়ালে কাঠ ও নারিকেলের খোসার ব্যবহার দেখে কারও কারও মনে পড়ে যেতে পারে শৈশবে নারিকেল গাছে উঠে দুষ্টুমির মুহূর্তগুলো। আর অপরপ্রান্তে তাকালেই মনে হতে পারে কোনো সমুদ্র সৈকতের পাড়ের জুসবারের কথা। যেখানে দাঁড়িয়ে স্বাদ নেওয়া যেতে পারে বাহারি পানীয়।
আর সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে কাঠের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে দুপাশে কাচ ঘেরা দেয়ালের ছিমছাম ঘরটি। যেখানেও সোফায় বসে চাইলেই উপভোগ করা যাবে বিকেলের শেষ আলোর খেলা।
শীতকালে এই উম্মুক্ত অংশে সকালের মিষ্টি রোদে শরীরটা একটু গরম করা গেলেও বর্ষায় যে কোনো মুহূর্তে মনে করিয়ে দিতে পারে ‘বৃষ্টি এলো অঝোর ধারায়’ গানটি। সেক্ষেত্রে প্রিয়জনের ছাতাটি হতে পারে আপনার একমাত্র ভরসা! (অথবা বসতে পারেন ভেতরে আচ্ছাদিত অংশে)
অন্যতম কর্ণধার মামুন মির্জা জানান আরও দুইজন কর্ণধারের মতো তিনিও দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন নিউ ইয়র্কে। আর তাই মেনুতে নিউ ইয়র্কের খাবারের ছোঁয়া মিলবে। আর পাশের দেশ মেক্সিকোর কিছু খাবারও থাকছে।
রেস্তোরাঁর অবস্থান একটি ফ্যাশন হাউজের ঠিক পাশে হওয়ায় বনেদি এলাকার বেশ কিছু অতিথি আসেন প্রায়শই বলে জানান মির্জা।
মেক্সিকান স্টার্টার নাচোজ একেবারে ‘খাঁটি’ মতে বানানো না হলেও খেতে মন্দ নয়।
২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হওয়া এই রেস্তোরাঁর ‘চিকেন মাশরুম’ খাবারটি খেলে জিভে জল ঠেকানো একটু কঠিন হবে বৈকি! একেবারে ‘যতটুকু’ নরম হওয়া দরকার তেমনভাবেই গ্রিলে নরম করা এই মুরগি! সসের মধ্যে ব্ল্যাক পেপারের (গোল মরিচ) হালকা আধিক্য যেন নরম মাশরুমের স্বাদকেই বাড়ায় অযাচিতভাবেই! তো ক্ষতি আছে কি এতে! পাশাপাশি থাকছে সবজি, গাজর, ফুলকপি, ব্রকলি ও বরবটি। যা হালকা সিদ্ধ ও প্রায় মসলাবিহীন। আর থাকে ম্যাশ পটেটো (বিলাতিদের আলু ভর্তা) যা বিলাতি স্টাইলেই বানানো এটা বলা যায়। অর্থাৎ ঝাল ছাড়া যদি আলুভর্তা রোচে আপেনার তাহলে ভালোই লাগবে।
এখানকার স্টেক মেনু থেকে কিছু বেছে নিলে ক্ষতি হবে না। কর্মরত শেফ স্টেক নিয়ে কাজ করেছেন দশ বছরের মতো জানান মামুন মির্জা। আছে বেশ কয়েক রকমের স্টেক বেছে নেওয়ার সুযোগ। আর মাংস আনা হয় বেঙ্গল মিট থেকে।
এছাড়াও মিলবে বাহারি কিছু ড্রিংকস।
যদি নাগরিক কোলাহল থেকে কিছু সময়ের জন্য ছুটি নিয়ে চান তাহলে অনায়াসে ঢুকে পড়তে পারেন কাচের দুয়ার ঠেলে নিচতলার ভিতরের অংশে। যেখানে নরম সোফাসেটে শরীর এলিয়ে অনায়াসে করা যাবে ব্যক্তিগত কিবা অন্য কোনো আলোচনা।
ছবি: তানজিল আহমেদ জনি