বাঙালি মেয়েদের উৎসব মানেই শাড়ি, কপালে টিপ আর হাত ভর্তি চুড়ি। এই সময়েও মেয়েদের মধ্যে হাত ভরে চুড়ি পরার আগ্রহ থাকে। শাড়ি ছাড়াও সালোয়ার কামিজ, টপস এবং কুর্তির সঙ্গে মানিয়ে চুড়ি পরে থাকেন অনেকেই।
যেকোনো উৎসবে কাচের চুড়ির জনপ্রিয়তা বরাবরই বেশি। এর পাশাপাশি প্লাস্টিক, কাঠ, মাটি, পুঁতি ও সুতার তৈরি চুড়িও ইদানিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বিভিন্ন দোকান ঘুরে বাহারি চুড়ির দরদাম ও এর চাহিদা সম্পর্কে জানা যায়।
ঢাকার গাউছিয়া ও নিউমার্কেটের চুড়ির দোকান ঘুরে জানা যায়, কাচের চুড়ি বিক্রি হয় প্রতি ডজন ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। স্টিলের চুড়ির সেট পাওয়া যাবে ৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। এছাড়া কাচের বালার দাম পড়বে ৮০ থেকে ৪৫০ টাকায়। বিক্রয়কর্মীরা জানান, মোটামুটে সব বয়সি মেয়েই চুড়ি কিনে থাকেন।
চিকন স্টিলের চুড়ি প্রতি ডজন ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করেন বলে জানান আরেকজন বিক্রেতা মো. পলাশ।
দোয়েল চত্বরের সামনে দেখা মিলবে কাঠের ও মাটির চুড়ি। এখানে কাঠের চুড়ি পাওয়া যাবে প্রতি জোড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় এবং মাটির চুড়ি প্রতি জোড়া ৪০ টাকা। তবে নকশা ও ধরনের ভিত্তিতে দাম বাড়তে পারে।
কাচের চুড়ির বিশাল সম্ভার পাওয়া যাবে শাহবাগে। শাহাবাগের রাশিদা নামক একজন চুড়ি বিক্রেতা বলেন, “এখানে প্রতি ডজন চুড়ি ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়। এই এলাকার অধিকাংশ ক্রেতাই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া। তাদের পছন্দের তালিকায় আছে রেশমি ও খাঁজকাটা কাচের চুড়ি।”
এছাড়াও এখানে পুঁতি ও শামুকের হাতের তৈরি চুড়িও পাওয়া যাবে।
এই প্রসঙ্গে কথা বলেন পুঁতির চুড়ি তৈরির কারিগর ও বিক্রেতা আমেনা বেগম। প্রতি জোড়া চুড়ি ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করেন বলেই জানান তিনি। তবে পুঁতির মান ও নকশার জন্য দাম কম বেশি হয়ে থাকে ।
শাঁখারি বাজারে বিভিন্ন দোকান ঘুরে জানা যায় চুড়ির দরদাম। শাঁখার দাম পড়বে প্রতি জোড়া ৪শ’ থেকে ৭শ’ টাকার মধ্যে। তবে এর পুরুত্ব ও নকশার পার্থক্যের কারণে শাঁখার চুড়ির দামে বাড়তে বা কমতে পারে।
তাছাড়া শাঁখারি বাজারেই পাওয়া যাবে সাদা প্লাস্টিকের বালা বা নকল শাঁখা। দাম ১শ’ থেকে ২৫০ টাকা। এছাড়া লাল পলার দাম ১২০ থেকে ২৫০ টাকা।
“মা মনষা শঙ্খ” দোকানের একজন ক্রেতা মনিকা দেবনাথ বলেন, “সবসময় শাঁখারি বাজার থেকেই শাঁখা-পলা কিনে থাকি। তাছাড়া অর্ডার দিয়ে সোনায় গরানো শাঁখাও নেই।”
শাঁখারি বাজার ছাড়াও বিভিন্ন স্বর্ণের দোকানে শাঁখার উপরে সোনা দিয়ে নকশা করিয়ে নেওয়া যায়। এক্ষেত্রে স্বর্ণের পরিমাণ ও নকশা হিসেবে দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
পুরান ঢাকার চক বাজার ঘুরে দেখা যায় যে এখানে প্রায় সব ধরনের চুড়িরই দোকান রয়েছে।
চকবাজারের চুড়ি বিক্রেতা আজিমউল্লাহ বলেন, “এখানে চুড়ির সর্বনিম্ন মূল্য ৪০ টাকা ও সর্বচ্চ মূল্য ২ হাজার টাকা।”
আজিম বলেন, “তবে সাধারণ ক্রেতারাও অনেক সময় পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে চুড়ি কিনতে এখানে এসে থাকেন।”
মিরপুরের মোহাম্মদীয়া মার্কেটের ‘সুমাইয়া ও রোকাইয়া’ দোকানেও পাওয়া যায় যাবে বিভিন্ন ধরনের চুড়ি।
এছাড়াও রাজধানীর যে কোনো মার্কেট যেমন- সেজান পয়েন্ট, বসুন্ধরা সিটি, ইস্টার্ন প্লাজা, ইস্টার্ন মল্লিকা, রাফিন প্লাজা, মৌচাক মার্কেট ইত্যাদি মার্কেটে পাওয়া যাবে বিভিন্ন ধরনের চুড়ি।