এবার রাজধানী ঢাকার দু’টি ভিন্ন জায়গায় প্রদর্শিত হয়েছে, আলোকচিত্রীদের সংগঠন টিটিএল’য়ের এই আয়োজন। আর তিনজন বিদেশি আলোকচিত্রীসহ এবারের আয়োজনে ১১৬জন আলোকচিত্রীর মোট প্রদর্শিত কাজের সংখ্যা ১৬০টি।
এর মধ্যে ধানমণ্ডির দৃক গ্যালারিতে ১১৮টি ও পুরান ঢাকার শাঁখারি বাজারের কল্পনা বোর্ডিংয়ে ঝোলানো হয়েছিলো ৪২টি ছবি।
পেশা কিংবা নেশা দুইয়ের বিচারেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আলোকচিত্র মাধ্যম। হয়তো ভাষার রীতির কারণেই ‘নেশা’ শব্দটি পছন্দ হবে না বঙ্গীয় ব-দ্বীপের অধিবাসী অনেকেরই। তবে ধানমণ্ডির দৃক গ্যালারিতে ভিন্ন মতের দেখা মিলল।
এরপর ‘ভার্চুয়াল থেকে রিয়াল’ দু’জায়গাতেই সমানভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে টিটিএল। এরই মাঝে সৌখিন আলোকচিত্রীদের সংগঠনটি অবশ্য নানারকম উদ্যোগের মধ্য দিয়ে মানুষের আরও কাছাকাছি এসেছে।
প্রতি বছর আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা ঠিক তেমনি একটি উদ্যোগ। ২০০৯ সালে শুরু হওয়া ‘বাংলাদেশ ইন ফ্রেমস’ শিরোনামের এই প্রদর্শনীর সপ্তম আয়োজন ছিল এবার। স্বাভাবিকভাবেই সময়ের সঙ্গে ব্যপ্তি বেড়েছে প্রদর্শনীর। সৌখিনদের পাশাপাশি প্রতিবারই পেশাদার আলোকচিত্রীদের কাজও জমা পড়ছে।
এছাড়া গেল বছর থেকে আলোকচিত্রের উপর বিখ্যাত ও গুরুত্বপূর্ণ সব বইয়ের সমাহার নিয়ে ‘সচিত্র’ নামের ‘ফটোগ্রাফিক বুক শো’র আয়োজনও শুরু করেছে টিটিএল।
ঢাকার ডাকসাইটে গ্যালারি দৃকের পাশাপাশি পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শাঁখারি বাজারের কল্পনা বোর্ডিংয়েও এবার প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিলো। দৃক গ্যালারির আয়োজন যতটাই আনুষ্ঠানিক, যতটা গুরুগম্ভীর শিল্পের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জায়গা, কল্পনা বোর্ডিং যেন ততটাই স্বতঃস্ফূর্ত। ব্যস্ত শাঁখারি বাজারের রাস্তার পাশেই এ যেন এক যজ্ঞ। প্রদর্শনী স্থলেই রয়েছে এক রিক্সা, বোর্ডিংয়ের রান্নার সরঞ্জাম এমনতর আরও নানান জিনিস।
“আমি এদেশে এসেছি মানুষ দেখতে। অল্প ক’দিনের মাঝেই এখানকার মানুষ আমাকে মুগ্ধ করেছে। যা ভেবেছিলাম তার চেয়েও বেশি আন্তরিক বাংলাদেশের মানুষ। তাই আমার কষ্ট হচ্ছিলো দু’দিন বাদেই চলে যেতে হবে বলে। এই প্রদর্শনী দেখে যেন কষ্টটা অনেক কমে গেলো। যেইসব মানুষের সঙ্গে আমি স্বশরীরে দেখা করতে পারলাম না, ছবিগুলো যেন আমাকে তাদেরই দেখিয়ে দিল। অসাধারণ এই প্রদর্শনী, অসাধারণ এমন পরিকল্পনা।”
পাঁচদিনের এই প্রদর্শনীতে হয়ত লেন্সের ফাঁক গলে পুরো বাংলাদেশকে দেখা যায়নি। তাই বলে প্রতি বছর বদলে যাওয়া বাংলাদেশ বদলে যাওয়া পরিবেশ দেখার যে আয়োজন করে যাচ্ছে টিটিএল সেটা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
ছবি: ফায়হাম ইবনে শরীফ।