কফি গ্লোরি

বছর দশেক আগে ঢাকায় এক পেয়ালা কফি-- যাকে মানসম্পন্ন কফি বলা যায়, খেতে চাইলে পাঁচতারা হোটেল সম্ভবত ছিল একমাত্র ভরসা।

মিথুন বিশ্বাসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2015, 04:17 PM
Updated : 28 Nov 2018, 08:50 PM

তবে এই সময়ে আমাদের দেশের অর্থনীতির কলেবর বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। আর এর প্রভাব বাঙালির উপর বিভিন্নভাবে পড়েছে, জিভের স্বাদ তার মধ্যে অন্যতম, এটা বললে বোধহয় বিশাল ভুল বলা হবে না।

খাবারের পাশাপাশি পানীয়ের বেলাতেও আমাদের জিভ ক্রমশ নতুন স্বাদ খুঁজতে ব্যস্ত। কফি এমনই এক পানীয়, এটা বলাই যায়।

এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয় উত্তরার কফি গ্লোরির কর্ণধার টিটো দেবনাথের সঙ্গে।

দেবনাথ জানান, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১২ পর্যন্ত কোরিয়াতে এমন একটি কোম্পানিতে কাজ করেছেন, যা মূলত কফি নিয়েই কারবার করত। ওই কোম্পানিতে কফি মেশিন সার্ভিসিং থেকে শুরু করে বারিস্তা ট্রেইনিং নিয়েছেন।

অর্থাৎ পানযোগ্য কফি বানানোর বিষয়ে মোটামুটি যে কয়টি ধাপ থাকে তাতে বেশ হাত পাকিয়েছেন। আর ঢাকায় ফিরে খুলে বসেছেন কফির কারবার!

উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর রোডে পহেলা বাড়ির দোতলায় অবস্থান এই কফিশপের। ঢোকার মুখে কিছুটা সবুজের ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। আরও পাওয়া যাবে কফির মোহনীয় ‘মাতাল’ করা ঘ্রাণ।

দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে পড়লে চোখ যাবে কফিশপটির সামনের অংশে যা পুরোটাই কাচে ঢাকা। আর কাচ ভেদ করে চোখে পড়বে এয়ারপোর্ট রোডের ডানে-বামে অবিরাম ছুটে চলা গাড়ির বহর। চোখ এড়াবে না বাইরের রাস্তায় ঘন সবুজের উপস্থিতি।  

সাকুল্যে ৪০ জন বসতে পারবেন। চেয়ার-টেবিল প্রাকৃতিক কাঠের রংয়ের। কাচে ঘেরা অংশে রোদ ঠেকানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে একেবারে খাঁটি দেশি মোটিফে বাঁশের তৈরি চিক। আর নিচের দিকে রয়েছে সারি দেওয়া টবের সবুজ।

যাই হোক, কফির ব্যাপারে টিটো দেবনাথ বলেন, ‘দেখুন,ব্যবসায়ী হিসেবে বলছি না, কিন্তু সাধারণ অর্থে কফির বেশকিছু ভালো গুণ আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। যেমন, সাধারণত পরিমিত পরিমাণ কফি লিভারের জন্য ভালো বলে মনে করা হয়।’

দেবনাথ আবার যোগ করেন, ‘তাই বলে আবার দিনে ১০-১২ কাপ কফি আপনার শরীরে ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই করবে না।’           

বিপণন কর্মকর্তা রতন সরকার জানান, এদের শুরু হয়েছিল ২০১২-তে উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরে। আর বর্তমান ঠিকানায় এসেছেন ২০১৩ সালে।

ভেতরটায় আলোর ব্যবহার বেশ সীমিতই মনে হল, এতে ইউরোপীয় ঘরানার একটু ছোঁয়া পাওয়া যায়। তবে এখানকার খাবার কিন্তু মিলবে মূলত কোরিয়ান ঘরানার। টিটো বহুদিন কোরিয়াতে থেকেছেন আর তার স্ত্রীও কোরিয়ান। আর খাবারের ব্যাপারে নজরদারি ইনিই করে থাকেন বলে জানান, সরকার। তার মানে এখানকার কোরিয়ান খাবার কিছুটা ‘খাঁটি’ ঘরানার হবে এটা বলা যায়।   

টিটো দেবনাথ জানান, ১২টি দেশ থেকে আমদানি করা কফির বিন রোস্টিং করেন নিজেই। আর এই রোস্টেড বিন পাওয়া যায় কিছু সুপারস্টোরে। আবার এই কফিশপে বসেও কেনা যাবে এই প্যাকেটজাত বিন।

একটি ভালো মানের ইউরোপীয় এসপ্রেসো কফি মেশিন দামের কারণে আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহার্যর জন্য প্রায় অসম্ভব! তবে প্রেসিং মেশিন ব্যবহার করে রোস্টেড বিনের গুড়া দিয়ে কাছাকাছি স্বাদ আনা যায় কফির।

দেবনাথ আরও জানান, ‘এইসব প্রেসিং মেশিন পাওয়া যায় এখানে’।

এসপ্রেসো ১৩০টাকা, আমেরিকানো ১৫০টাকা, লাত্তে/কাপুচিনো ১৬০টাকা, মোকা/মাকিয়াত্তো২২০টাকা পড়বে।    

ওয়াইফাই আছে, খোলা থাকে সকাল ৯টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। তবে ব্রেকফাস্ট এখানে পাওয়া যায় না।

ছবি: প্রতিবেদক