গরমের সাজপোশাক

গরমে দৈনন্দিন কাজ নির্ভেজালভাবে করতে প্রয়োজন আরামদায়ক পোশাক।

তৃপ্তি গমেজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2015, 12:05 PM
Updated : 30 March 2015, 01:40 PM

গরমে বাইরে কাজ করার জন্য পোশাক বাছাইয়ে কিছুটা সচেতন হওয়া প্রয়োজন। এই সময় কী ধরনের পোশাক পরা উচিত, পোশাকের রং কী হবে, কোন পোশাকের সঙ্গে কোন গহনা মানাবে- এই বিষয়গুলো কমবেশি সবাইকেই ভাবিয়ে তোলে।

গরমে পোশাক নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ‘বস্ত্র পরিচ্ছদ ও বয়নশিল্প বিভাগ’য়েল সহকারী অধ্যাপক শাহমিনা রহমান।

গরমের মৌসুমে পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুতির পাশাপাশি লিলেন কাপড়ের তৈরি পোশাক পরার পরামর্শ দেন তিনি।

শাহমিনা রহমান বলেন, “সুতি কাপড়ের শোষণ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় এটি গরমে ব্যবহারের জন্য বিশেষ উপযোগী। তাছাড়া সুতি কাপড়ে তৈরি পোশাক আরামদায়ক এবং দীর্ঘস্থায়ী। অন্যদিকে এ ধরনের পোশাকের যত্ন নেওয়া তুলনামূলক সহজ।”

কাপড়, সুতা, নারিকেলের মালা ও বিভিন্ন ফলের বীজের তৈরি গহনা ব্যবহার করা যেতে পারে। ছবি: রঙ।

সুতি ও লিনেন কাপড় বাতাস চলাচলে সহায়তা করে ও ঘাম শোষণ করে বলে এই ধরনের পোশাক গরমে ব্যবহার করার পরামর্শ দেন শাহমিনা।

পোশাকের রং

গরমে হালকা রংয়ের পোশাক বেছে নেওয়াই ভালো। বিশেষ করে দিনের বেলা হালকা রংয়ের পোশাক নির্বাচনের পরামর্শ দেন শাহমিনা। সন্ধ্যায় বা রাতে চাইলে গাঢ় রংয়ের পোশাক পরা যেতে পারে। তবে অবশ্যই তা সুতির হওয়া প্রয়োজন। দিনের বেলায় হালকা নীল, হালকা সবুজ, গোলাপি, সাদা, অফ হোয়াইট, হালকা বেগুনিসহ যে কোনো হালকা রং ব্যবহার করা যাবে।

পোশাকের ধরণ

শাহমিনা বলেন, “যেই ধরনের পোশাকই ব্যবহার করা হোক না কেনো খেয়াল রাখতে হবে তা যেন খুব বেশি আঁটসাঁট না হয়। গরমে ঢিলেঢালা পোশাক পরলে আরাম পাওয়া যায়।”

গরমে গয়না নির্বাচন

গরমকালে গহনা ব্যবহার করলে কিছুটা অস্বস্তি লাগতে পারে। তবে একেবারে কান, গলা বা হাত খালি রাখাও সবসময় ভালো দেখায় না। তাই গরমকালে গহনার ব্যবহারে কিছুটা পরিবর্তন আনার কথা বলেন শাহমিনা।

এক্ষেত্রে কাপড়, সুতা, নারিকেলের মালা ও বিভিন্ন ফলের বীজের তৈরি গহনা ব্যবহার করার পরামর্শ দেন শাহমিনা। এ ধরনের গয়না হালকা ও রঙিন হয়। আর তাই সামান্য সাজেই আকর্ষণীয় দেখায়। তাছাড়া পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে বা কনট্রাস্ট করে এই ধরনের

গরমে চুল পনিটেইল, বেণি বা খোঁপা করা আরামদায়ক। ছবি: অতুল।

পরতে পারেন হালকা রংয়ের পোশাক। ছবি: কে ক্র্যাফট।

গয়না ব্যবহার করলে দেখতে ভালোলাগে।

কেশ বিন্যাস

গরমে চুল খোলা না রাখার পরামর্শ দেন শাহমিনা। সারাক্ষণ পিঠ ও ঘাড় ঘামতে থাকে ফলে পোশাকে তিলাদাগ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

তাছাড়া চুল খোলা রাখলে গরম আর অস্বস্তিও লাগে। আর এর ছাপ চেহারাতেও পড়ে। তাই গরমকালে বিশেষ করে দিনের বেলায় পনিটেইল, বেণি, খোঁপা বা কাঁটাক্লিপ ব্যবহার করে চুল বেঁধে রাখলে দেখতেও ভালো দেখায় আর গরমও কম লাগবে।

পেশা অনুযায়ী পোশাক

পেশা অনুযায়ী পোশাক নির্বাচনের জন্য পোশাকের রং, তন্তু, ধরন ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।

এই সম্পর্কে শাহমিনা বলেন, “কর্মজীবী নারীরা হালকা রংয়ের সুতি শাড়ি, পাতলা জমিনের শাড়ি, সুতির সালোয়ার কামিজ পরতে পারেন।”

সুতি ও লিনেন কাপড় বাতাস চলাচলে সহায়তা করে ও ঘাম শোষণ করে। মডেল: আজিজি ফাওমি খান।

“রাতে যেকোনো অনুষ্ঠানে সিল্ক, মসলিন, জামদানি বা পাতলা জমিনের গরদের শাড়ি বেছে নেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে কিছুটা গাঢ় রং হলেও সমস্যা নেই। এসব শাড়ির সঙ্গে হালকা গহনা ও হালকা মেইকআপ বেশ ভালো মানিয়ে যায়।” বললেন শাহমিনা।

তিনি আরও পরামর্শ দেন, “যারা পুরোপুরি শাড়ি এড়িয়ে চলতে চান তারা প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য সুতি, লিলেন, টাইডাই, হালকা প্রিন্ট ও বাটিকের সালোয়ার-কামিজ বেছে নিতে পারেন।” বলেন শাহমিনা।

স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা ফতুয়া, লং কামিজ, স্কার্ট ইত্যাদি পরতে বেশি পছন্দ করেন। এক্ষেত্রে অ্যাপলিক, টাইডাই, বাটিক, প্রিন্ট ইত্যাদি কাপড় বেশ উপযোগী। এছাড়াও সুতি বা লিনেনের তৈরি বিভিন্ন ধরনের পোশাকের সঙ্গে বেণি বা পনিটেইল করলে দেখতে ভালো দেখায়।

ছেলেরা শর্ট-শার্ট, সুতির ফতুয়া, পাঞ্জাবি ও পাতলা টি-শার্ট পরতে পারেন। এতে গরম কিছুটা কম লাগে আর আরাম পাওয়া যায়।